Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:55 am

অ্যানিমিয়া নির্ণয় পরীক্ষা ও খাবার

(গত সংখ্যার পর)

একজন মানুষ আরেকজন থেকে আলাদা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যক্তিবিশেষে স্বাভাবিকভাবে একজন পুরুষের রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ ১৩ দশমিক আট থেকে ১৭ দশমিক দুই ডেসিলিটার। নারীদের বেলায় তা ১২ দশমিক এক থেকে ১৫ দশমিক এক ডেসিলিটার। রক্তে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে গেলে অ্যানেমিয়া বা রক্তাল্পতা দেখা দেয়।
গত পর্বে অ্যানিমিয়ার কারণ ও উপসর্গ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এবার দেখে নিতে পারেন অ্যানিমিয়ার নির্ণয়, পরীক্ষা ও খাবারদাবার সম্পর্কে।
রোগ নির্ণয়: প্রথমেই আসে চিকিৎসার ইতিবৃত্ত। এর মধ্যে রয়েছে দুর্বলতা, অসুস্থতাবোধ, ব্যথা প্রভৃতি। এসব উপসর্গ বিশ্লেষণ করেন চিকিৎসকেরা।
এরপর আসে রক্ত পরীক্ষা। হিমোগ্লোবিনের স্তর পরীক্ষা করা হয় এ পর্যায়ে। পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন হিমোগ্লোবিন-সমৃদ্ধ লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম আছে কি না।
শারীরিক পরীক্ষার মধ্যে থাকে দ্রুত ও অনিয়মিত হƒৎস্পন্দন হচ্ছে কি না। দ্রুত ও শ্বাস-প্রশ্বাস অনিয়মিত কি না। পাশাপাশি যকৃৎ অথবা প্লীহার অতিরিক্ত বৃদ্ধি হয়েছে কি না।
পরবর্তী পর্যায়ে কমপ্লিট ব্লাড-কাউন্ট (সিবিসি) বা সম্পূর্ণ রক্তকণিকার সংখ্যা গণনা করা হয়। রক্তে কত রক্তকণিকা আছে তা সিবিসি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। মূলত একজন চিকিৎসক রক্তাল্পতা হয়েছে কি না তা জানার জন্য রক্তের মধ্যে লোহিত রক্তকণিকা ও হিমোগ্লোবিনের স্তর পরীক্ষা করেন। প্রসঙ্গত, পূর্ণবয়স্ক মানুষের রক্তে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা ব্যক্তিবিশেষে আলাদা। তবে তা গড়ে ৩৪ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষের ক্ষেত্রে, নারীদের বেলায় ৪৪ দশমিক পাঁচ শতাংশ।
লোহিত রক্তকণিকার আকার ও গঠন নির্ধারণের পরীক্ষা করেও রোগটি নির্ণয় করা যায়। কিছু রক্তকণিকার আকার, গঠন, বর্ণ প্রভৃতি রোগ নির্ধারণে সহায়ক। যেমন আয়রনের অভাবজনিত রক্তাল্পতায় লোহিত রক্তকণিকার আকার তুলনামূলক ছোট ও বিবর্ণ হয়। আর ভিটামিনের অভাবজনিত রক্তাল্পতায় লোহিত রক্তকণিকার আকার তুলনামূলকভাবে বড়, সংখ্যায় কম।
খাবার: লৌহ বা আয়রনের পরিপূরক খাবার খাওয়া উচিত। আয়রনের পরিপূরক হিসেবে সাধারণত দিনে দুই থেকে তিনবার ফেরাস-সালফেটযুক্ত খাবার খাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে গাঢ় সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি, নানা ধরনের খাদ্যশস্য, গোটা শস্য প্রভৃতি। পালংশাক, ডিম, কলিজা, দুধ, মধু, সয়াবিন, মটরশুঁটি, বাদাম, মাংস, অ্যাপ্রিকোট প্রভৃতি খাওয়া উচিত।