অ্যাপেন্ডিসাইটিসে অস্ত্রোপচার জরুরি

অ্যাপেন্ডিক্স নামের ছোট অঙ্গটি নলাকার আকৃতির এবং দৈর্ঘ্যে এটি দুই থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এটির অবস্থান আমাদের পেটের নাভির পাশে, একটু নিচে তলপেটের ডান দিকে। আমাদের দেহে অঙ্গটির কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই চিকিৎসকেরা মনে করেন। এই ছোট নলাকার অঙ্গটির প্রদাহ হয়ে ফুলে গেলে সেটিকে অ্যাপেন্ডিসাইটিস বলা হয়। অ্যাপেন্ডিসাইটিস একটি জরুরি অবস্থা। চিকিৎসা না করালে গুরুতর সমস্যা তৈরি হতে পারে। সে অবস্থায় তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। এমনই এক জটিল অবস্থা হচ্ছে পেরিটোনাইটিস। অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গিয়ে পেটের সর্বত্র এর ভেতরের জীবাণু ছড়িয়ে পড়লে এ অবস্থা তৈরি হয়।

আরেকটি অবস্থার নাম অ্যাপেন্ডিসাইটিস রাম্বলিং। অ্যাপেন্ডিসাইটিসের কারণে যখন পেটে ব্যথা অপেক্ষাকৃত কম অনুভ‚ত হয়, সে অবস্থাকে অ্যাপেন্ডিসাইটিস রাম্বলিং বলা হয়। পেটের ডান দিকে বা নাভির চারপাশে ব্যথা হলেই যে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। এজন্য দরকার অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। অভিজ্ঞ চিকিৎসক পেটে হাত দিয়ে পরীক্ষা করে এবং কিছু উপসর্গ দেখে বলে দিতে পারেন অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে কি না। এ রকম কিছু উপসর্গ হলো কাশি দেয়ার সময় পেটে প্রচণ্ড ব্যথা, তলপেটের ডান বা বাঁ দিকে চাপ দিলে বিপরীত দিকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভ‚ত হয়। যেকোনো পেটব্যথা, বিরতি দিয়ে দিয়ে জ্বর, খিদে না লাগা, বমি-বমি ভাব ও বমি, কোষ্ঠকাঠিন্যÑএ লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রæত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক প্রয়োজনবোধে আলট্রাসাউন্ড অথবা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিসাইটিস নির্ণয় করবেন। এ ছাড়া মূত্র পরীক্ষা, পেটের এক্স-রে এবং পেটের সিটি স্ক্যান করেও এ রোগ নির্ণয় করা হয়। মা-বাবার কারও এ রোগ হয়ে থাকলে শিশুদের তা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট খাবার বেশি খেলে এবং আঁশজাতীয় খাবার যেমন ফলমূল ও শাকসবজি কম খেলে এ রোগ হতে পারে। শল্যচিকিৎসা ছাড়া অ্যাপেন্ডিসাইটিসের কোনো চিকিৎসা নেই।

অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান

কলোরেক্টাল ও ল্যাপারোস্কপিক সার্জন

ডেল্টা হেলথ কেয়ার লি., মিরপুর, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০