নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের বিশেষ ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক তার নিজস্ব নিয়মের পাশ কাটিয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের অবসরে যাওয়া এমডি মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ারকে ওই ব্যাংকের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ অনুমোদন করেছিল। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত বুধবার সেই নিয়োগ বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. রফিকুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ারের উপদেষ্টা নিয়োগ বাতিল করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠি দিয়েছে। ইতোমধ্যে তা বাতিলও করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, অবসর, অব্যাহতি বা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ঠিক নিচের দুই স্তরের কোনো কর্মকর্তাকে ওই ব্যাংকের উপদেষ্টা বা পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না।
অথচ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ারের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ১৩ মে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অর্থাৎ ১১ মে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ‘বিশেষ বিবেচনায়’ এই নিয়োগ অনুমোদন করেন।
এরপর ২৬ মে থেকে তিনি ব্যাংকটির ‘কৌশলগত উপদেষ্টা’ হিসেবে যোগদান করেন। এই তথ্য তিনি ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারও করেছিলেন। তিনি এতদিন আগের মতো একই কক্ষে বসেই এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই সময় নিজেদের করা সেই বিধান লঙ্ঘন করে বেসরকারি খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের অবসরে যাওয়া এমডির ওই ব্যাংকের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ অনুমোদন করেছিল। প্রায় সাড়ে তিন মাস পর সেই নিয়োগ বাতিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা যায়, ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ারের নিয়োগ অনুমোদন দিতে বাধ্য হয়েছিল।
জানা যায়, শাহ আলম সারওয়ার ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে গত ১৩ মে পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি ছিলেন। দেশে-বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে কাজ করা শাহ আলম সারওয়ার ২০০৫ সালে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের এমডি হিসেবে শীর্ষপদে কাজ শুরু করেন। এরপর একে একে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালর করেন। পাশাপাশি তিনি ২০১১-২০ সাল পর্যন্ত সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালকও ছিলেন।
