আইএমএফের বিবেচনায় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ইরান

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বশেষ তালিকায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে ইরান। আইএমএফের তালিকায় ২০তম অবস্থানে উঠে এসেছে ইরান। নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে দেশটির অর্থনীতি। খবর: তেহরান টাইমস।

নানা কারণে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এজন্য দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কোনো ক্ষতি হয়নি বলে দাবি বিশ্লেষকদের। দেশটির আগে রয়েছে ১৯টি দেশ। তাদের অর্থনীতির আকার পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া, মিসর, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, পর্তুগাল, ওমান, কুয়েত ও আর্জেন্টিনার মতো দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইরানের অর্থনীতি।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি (আইআরএনএ) গত রোববার এ বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ২০২১ সালে ইরানের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সমতা বা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি (পিপিপি) সমন্বয়ের মাধ্যমে মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ওপর ভিত্তি করে আইএমএফ এ তালিকা করেছে।

আইএমএফের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, পিপিপিকে ভিত্তি ধরে ২০২১ সালে ইরানের জিডিপি ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। সংস্থার অনুমান, চলতি বছর ইরানের জিডিপির আকার আরও ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বেড়ে এক লাখ ৫৭ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে।

আইএমএফের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, কয়েক বছর ধরে তেহরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরও এ সময় ইরানের অর্থনীতির আকার বেড়েছে। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের ১৭৩টি দেশের চেয়ে সে বছর ইরানের অর্থনীতির আকার ছিল বড়।

আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিপিপির ভিত্তিতে ২০২১ সালে বিশ্বে সর্ববৃহৎ অর্থনীতি ছিল চীন। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই বছর চীনের জিডিপি ছিল আনুমানিক ২৭ লাখ ২০ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি ছিল ২২ লাখ ৯৯ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের।

এদিকে বিগত বছরগুলোর মতো চলতি বছরও ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় ইরানের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও এক ইরানি নাগরিকের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। গত ১৩ মার্চ ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ইরবিলে ১২টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)। এজন্য দেশটির ওপর এই নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালের শুরুতে ইরানের পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসার এবং তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার আগ্রহ দেখান। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরানের পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের আলোচনায় পরোক্ষভাবে অংশ নেয়। ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা নিয়ে আবার যখন একটি চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তখনই এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়া হয়।

পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ রয়েছে দুই দেশের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসবাদ ও ইরানের জনগণের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের ২৪ ব্যক্তি ও কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, জাতিসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবাধিকার লঙ্ঘনে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর আগে ইরানও দুবার যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও কূটনীতিকরা।

এই পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ২০২৩ সালেও ইরানের অর্থনীতি একই ধরনের থাকবে বলে এক পূর্বাভাসে জানায় আইএমএফ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০