হামিদুর রহমান: রাজধানীতে জমজমাট ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ব্যবসা। সাবমেরিন কেবল প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) বাড়লেও ভোগান্তি কমছে না ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের। সংযোগ নেওয়ার প্রথম দিকে গিগাবাইট অনুযায়ী, সার্ভিস ভালো দিলেও ধীরে ধীরে গতি কমে যায়। অনেক সময় টাওয়ার থাকলেও গতি থাকে না। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা।
অনলাইনে কেনাকাটা, ব্যাংকিং, পড়াশোনা, স্বাস্থ্যসেবা, ই-গভর্ন্যান্সসহ টেলিকনফারেন্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রহণ করছে সাধারণ মানুষ। তবে ইন্টারনেট নিয়ে দীর্ঘ অভিযোগ রয়েছে চাকরিজীবী, তরুণ-তরুণীসহ সব শ্রেণিপেশা মানুষের। ব্যবহারের চেয়ে টাকা বেশি নেওয়াসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে ইন্টারনেট সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। দেশে থ্রিজি সেবা চালু থাকলেও ইন্টারনেটের ধীরগতি এখনও একটি বড় সমস্যা। দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, জাপান যেখানে ১৬ থেকে ২২ এমবিপিএস সেবা প্রদান করছে, বাংলাদেশে সেখানে এখনও ২ এমবিপিএস নিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা জানান, সমস্যায় পড়ে অভিযোগ করলেও অভিযোগ আমলে না নিয়ে নানা অজুহাতে ফাঁকি দিচ্ছে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠাগুলো। বিদ্যুৎ সমস্যা, কেবল সমস্যা, কম্পিউটারের সমস্যাসহ হাজারটা সমস্যার কথা বলে তারা এড়িয়ে যায়। পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক সিন্ডিকেট থাকায় অন্য লাইন নিতে গেলেও সমস্যায় পড়তে হয় গ্রাহকদের।
বিটিআরসির সচিব ও মুখপাত্র সারওয়ার আলম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘বিজনেস করতে হলে সার্ভিসও ভালো দিতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের গ্রাহকদের কথা মাথায় রাখতে হবে। কারণ মানুষের কেনাকাটা, লেনদেনসহ প্রয়োজনীয় সব কাজ এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে হচ্ছে।’
ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মাহফুজ জানান, তিনি ওয়ানলিংক নামে একটি ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সংযোগ নিয়েছেন। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো সমস্যায় সম্মুখীন হতে হয় তাকে। মাঝে মধ্যেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, আবার টাওয়ার থাকলেও নেট নেই। আর এ সমস্যার জন্য তিনি কয়েকবার অভিযোগ করলে প্রতিষ্ঠানের অপারেটররা তার ল্যাপটপে সমস্যা আছে বলে জানায়। অথচ মডেম কিংবা অন্য কোনো লাইনে এমন সমস্যা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
ইন্টারনেট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অন্তরঙ্গ ডটকম জানায়, গতি কমার কারণ হচ্ছেÑঅনেকেই রাউটার ব্যবহার করে। রাউটারের লিমিটেশন থাকে, যেটা অতিক্রম করলে ইন্টারনেট গতি পায় না। বেশিরভাগ লোক এখন রাউটার ব্যবহার করছে, যে কারণে ইন্টারনেটের গতি কমে যায়। অনেক সময় কম্পিউটারে সফটওয়্যারের সমস্যা থাকলে আপডেট করতে হয়। কাস্টমাররা ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অনেক সময় সার্ভিস দিতে একটু সমস্যা হয়। তবে গ্রাহকরা সামনে আরও ভালো সুবিধা পাবেন। আমরা গ্রাহকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে কাজ করছি।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার পাল শেয়ার বিজকে বলেন, ‘পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন সিন্ডিকেট এখন ইন্টারনেট ব্যবসা করছে। ইন্টারনেট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাটাগরি সম্পর্কে গ্রাহকদের কোনো ধারণা না থাকায় সার্ভিস ভালো পাচ্ছে না। যাদের লাইসেন্স আছে, তাদের সার্ভিস খারাপ হয় না। লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।’
Add Comment