আইজিসির প্রতিবেদন : ছয় মাসে স্বর্ণের চাহিদা কমেছে ১৪ শতাংশ  

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক : চলতি বছরের প্রথমার্ধে স্বর্ণের চাহিদা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ১৪ শতাংশ। গত আট বছরের মধ্যে এ চাহিদা সর্বনি¤œ। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে মূল্যবান এ ধাতুটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সরে দাঁড়ানোয় সামগ্রিক চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (আইজিসি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর এএফপি।

আইজিসির সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের চাহিদা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমে দুই হাজার চার টনে পৌঁছেছে। ২০০৯ সালের পর এ চাহিদাই সবচেয়ে কম। ওই সময় স্বর্ণের চাহিদা ছিল এক হাজার ৮৫৩ টন।

স্বর্ণের চাহিদা সবচেয়ে বেশি কমেছে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে। ওই সময় স্বর্ণের চাহিদা ছিল ৯৫৩ দশমিক চার টন। আগের বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের তুলনায় এ চাহিদা ১০ শতাংশ কম।

এছাড়া প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কমেছে ১৮ শতাংশ। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণে বিনিয়োগ কমিয়ে দেয়; এতে চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বিনিয়োগে ধাতুটির চাহিদা কমে আসার কারণ যুক্তরাষ্ট্রে সুদহার কয়েক ধাপ বাড়ানো এবং আরও বাড়ানোর সম্ভাবনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরা ঝুঁকে পড়ছেন বিকল্প বিনিয়োগে। ফলে মূল্যবান এ ধাতুটিতে বিনিয়োগের চাহিদা কমছে। সাধারণত সুদহার বাড়লে ডলারের দাম বাড়ে। এতে স্বর্ণের চাহিদা কমে। ডলারের দাম কমলে ভিন্ন মুদ্রা ব্যবহারকারীদের জন্য স্বর্ণ কেনা সহজ হয়। এতে চাহিদা বাড়ে। তবে উভয় পণ্যের বাজারেই মুদ্রানীতির প্রভাব আছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আইসিইতে ইউএস ডলার সূচক ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ অবস্থানে আছে। ডলারের অবস্থান দুর্বল হলেও ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদহার বৃদ্ধির আশঙ্কায় কমেছে স্বর্ণের চাহিদা।

চলতি বছরের জুনে দ্বিতীয়বারের মতো সুদহার বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার হার দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ফেডের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি আগে ছিল এক শতাংশ। এর আগে সর্বশেষ  ফেব্রুয়ারিতে দেশটি সুদের হার বাড়ায়। এ নিয়ে মাত্র ছয় মাসে দুবার হার বাড়ানো হলো।

২০০৮ সালের পর এ হার সর্বোচ্চ। মার্কিন অর্থনীতিতে সংকটের পর ওই সময় নীতিনির্ধারকরা ঋণ নেওয়া ও ব্যয় কমাতে সুদহার কমায়।

ফেড চেয়ারপারসন জেনেট ইয়েলেন সম্প্রতি বলেন, মার্কিন অর্থনীতিতে এখন সুবাতাস বইছে। অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে।  সে সঙ্গে শ্রমবাজারেও ইতিবাচক সাড়া পড়ছে। যার কারণে সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে এডিপির এক প্রতিবেদনে জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের  বেসরকারি খাতে প্রত্যাশার চেয়ে একটু বেশি প্রায় এক লাখ ৭৮ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির খবর জানানো হয়েছে। মার্কেট ওয়াচের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে গত মাসে দেশটিতে এক লাখ ৮০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির তথ্য জানানো হতে পারে। একই সঙ্গে দেশটির বেকারত্বের হার চার দশমিক চার শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা হবে ১৬ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ। এতে সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও বাড়লো।

বুধবার ওহাইওতে এক ব্যাংকিং কনফারেন্সে ক্লিভল্যান্ড  ফেডারেল রিজার্ভের লরেট্টা মেসটের জানান, ফেড ক্রমান্বয়ে কঠোর মুদ্রানীতি গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০