নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ম্যানেজারস প্রোগ্রাম-১’-এ অংশ নিতে ঈদের আগে গতকাল সপরিবারে সিঙ্গাপুর গিয়েছেন কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতরের (ডিআইএফই) ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) মো. শামসুজ্জামান ভূইয়া। অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত আইজি ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহকে ভারপ্রাপ্ত আইজি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে। এদিকে ঈদের আগে বেতন-ভাতাসহ নানা ইস্যুতে পোশাক শ্রমিকরা ভিড় করছে অধিদফতরের কার্যালয়ে। এ নিয়ে গলদঘর্ম অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে কর্মকর্তাদের।
গতকাল সরেজমিনে কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, টঙ্গীর মিলেনিয়াম অ্যাপারেলস লিমিটেড ও টপডাউন গার্মেন্টের শ্রমিকদের একটি গ্রুপ ডিআইএফই’র কার্যালয়ে অবস্থান করছে। তাদের সঙ্গে সন্ধ্যা অবধি আলোচনা করছিলেন ভারপ্রাপ্ত আইজি। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রমজানের পরই ওই কারখানা থেকে নানা সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলা হচ্ছিল। পরে মালিক পক্ষ জুলাই মাসে শ্রমিকদের কাজ করালেও হঠাৎ করে আগস্টের প্রথম দিন থেকে কারখানা বন্ধ করে দেন। কারখানার প্রায় ৪৫০ শ্রমিকের এক মাসের বেতন ও অন্যান্য ভাতা না দিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়। এ নিয়ে এর আগে তিন বার শ্রমিকরা ডিআইএফই কার্যালয়ে এসেছে। অধিদফতরের কর্মকর্তারা মালিক পক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের মধ্যস্থতা করেন। সে হিসেবে গতকাল (২০ আগস্ট) শ্রমিকদের পাওনা গতকাল (২০ আগস্ট) শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়েছিল মালিক পক্ষ। কিন্তু গতকাল কারখানার ম্যানেজার শ্রমিকদের জানিয়েছেন, ২৮ তারিখে তাদের টাকা দেওয়া হতে পারে। শ্রমিকদের অভিযোগ, সময়ক্ষেপণ করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে। সামনে ঈদের বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্য তারা অধিদফতরে এসে অবস্থান করেছে।
উল্লেখ্য, ‘বিদেশ ভ্রমণে কল-কারখানার ঊর্ধ্বতনরা : ঈদকেন্দ্রিক শ্রমসংকট নিরসনে দায়িত্ব পালনে শঙ্কা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গতকাল শেয়ার বিজে। তাতে বলা হয়, ‘ঈদুল আজহার সময়ে পোশাক কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বিষয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সরকারি তরফে এ বিষয়ে তদারকির দায়িত্ব পালন করে ডিআইএফই। আইজিসহ শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি দল বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন। এতে ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতার বিষয়ে তদারকির কার্যক্রম নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। আর গতকালই এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে অধিদফতরের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তিনি গতকাল বিকাল পর্যন্ত আলোচনা করেও শ্রমিকদের শান্ত করতে পারছিলেন না। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ প্রসঙ্গে ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘সাময়িক সংকট সৃষ্টি হলেও এটা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। তাছাড়া শ্রমিকদের ইস্যু আমাদের প্রধান কার্যালয় থেকে সমাধান করার কথা নয়। এজন্য আমাদের গাজীপুর ও অন্যান্য জায়গায় ব্যবস্থা রয়েছে। গাজীপুরের ডিআইজি এ বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।’
ওই দুটি কারখানার শ্রমিকদের দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুটি গার্মেন্টের মালিক একজনই। গাজীপুরের ডিআইজি ও বিজিএমইএর মধ্যস্থতায় মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে এর আগে চুক্তি হয়েছিল। সে হিসেবে ২০ তারিখে বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মালিক পক্ষ একক সিদ্ধান্তে এটি পরিবর্তন করে ২৮ তারিখ নির্ধারণ করেছে। এ নিয়ে আমি মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গাজীপুরের আমাদের কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছি।’
Add Comment