নিজস্ব প্রতিবেদক: নামমাত্র সূচক বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। তবে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে আইটি খাতে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ দেখা গিয়েছে। ফলে খাতটিতে শেয়ার বিক্রির চাপও বেড়েছে। এতে আলোচ্য খাতটি লেনদেনের শীর্ষে থাকলেও শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। এদিকে আগের দিন খাতটি লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও শেয়ারদর কম ছিল। গত সপ্তাহে খাতটি শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। যে কারণে সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস বিনিয়োগকারীরা মুনাফা সংগ্রহ করছেÑজানান সংশ্লিষ্টরা।
আগের দিনের মতো এদিন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল ভ্রমণ খাতের শেয়ারে। এতে খাতটির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এরপর দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ার। বিমা, ট্যানারি এবং কাগজ ও মুদ্রণ খাত শেয়ারদর বৃদ্ধির তৃতীয় স্থানে ছিল।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ২ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টির দর বেড়েছে এবং ২টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এরপরের অবস্থানে থাকা ওষুধ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। এদিন বিমা খাতে মোট ৩৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৫টির দর বেড়েছে এবং ৮টির দর কমেছে। তৃতীয় স্থানে থাকা বিমা, ট্যানারি এবং কাগজ খাতের দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। বিমা খাতে লেনদেন হওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ১১টির দর বেড়েছে এবং ৪২টির দর কমেছে। ট্যানারি খাতের ৬টি কোম্পানির মধ্যে ১টির দর বেড়েছে এবং ৩টির কমেছে। কাগজ খাতে লেনদেন হওয়া ৬টি কোম্পানির মধ্যে ২টির দর বেড়েছে এবং ২টির কমেছে। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাংক এবং প্রকৌশলী খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় আইটি খাতে শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ১০ শতাংশ। এরপর স্থানে থাকা পাট খাতে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল সেবা ও আবাসন এবং বিবিধ খাত।
অপরদিকে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আইটি খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাধারণ বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা জীবন বিমা খাতে মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১০ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, ডিএসইতে গতকাল ৫০৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার ও সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। এ হিসাবে গতকাল ১৮৩ কোটি ১৩ লাখ টাকার বা ২৬ শতাংশ লেনদেন কমেছে।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২৬৪ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩৬৫ পয়েন্টে এবং ২২১২ পয়েন্টে। ডিএসইতে ৩৪৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৩৪টির বা ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশের, শেয়ারদর কমেছে ১৪০টির বা ৪০ দশমিক ১১ শতাংশের এবং ১৭৫টির বা ৫০ দশমিক ১৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৪৫৭ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৭৩টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭৩টির এবং ৭২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।