নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাই দেশ চালাচ্ছেন এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) চেয়ারম্যান, জেলার, পুলিশ, বিচারক সবকিছুই এখন শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ি নূর আহমদ সড়কে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার মশা মারতে পারে না, কিন্তু মানুষ মারতে পারে। এমন সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে কী হবে? খালেদাকে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্তি দেওয়া হবে না, এটা প্রমাণিত। আমরা আর খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইব না। যারা তার মুক্তির পথে বাধা দেবে, তাদের ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো হবে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে চুরির মামলায় গ্রেফতার করা হবে। তাই তার কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে লাভ নেই।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, বিএনপিকে নিঃশেষ করা যাবে না। বিএনপি গণমানুষের দল। বিএনপি ধরনা দেওয়ার দল নয়। বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকেই হবে। তার মুক্তিতে সামনে কঠোর কর্মসূচি আসবে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
এর আগে, বেলা সাড়ে ৩টায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে নগরের কাজীর দেউড়ি নূর আহমদ সড়কে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ শুরু হয়। নূর আহমদ সড়কে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেওয়ায় নগরীর কাজীর দেউড়ি থেকে লাভলেন পর্যন্ত নূর আহমদ সড়কের পূর্ব পাশে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সমাবেশ মঞ্চে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, মহাসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে প্রায় আড়াই সপ্তাহ আগে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হলেও মাত্র ২১ ঘণ্টা আগে ২৭টি শর্ত দিয়ে বিএনপিকে চট্টগ্রামে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে নগর পুলিশ।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বিশেষ শাখা) মো. আবদুল ওয়ারীশ খান বলেন, ‘২৭টি শর্তে নাসিমন ভবনের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বিএনপিকে।’
উল্লেখযোগ্য শর্তগুলো হচ্ছে নাসিমন ভবনের সামনের দুই লেনের সড়কের পূর্ব পাশে সমাবেশ করা, কোনোভাবেই পশ্চিম পাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ না করা, মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে না আসা, সমাবেশস্থলে আসা কেউ যাতে লাঠিসোটা, রড, দেশীয় অস্ত্র বহন না করে; উসকানিমূলক ও রাষ্ট্রবিরোধী কোনো বক্তব্য-সেøাগান না দেওয়া এবং সমাবেশস্থলের আশপাশে শুধু মাইকের ব্যবহার।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর চট্টগ্রামে এটিই প্রথম বিভাগীয় সমাবেশ বিএনপির।
