Print Date & Time : 26 June 2025 Thursday 1:53 pm

আইন করে প্লাস্টিক ব্যাগ বন্ধ করা যাবে না: পরিবেশমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন করে প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদন বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আইইউসিএন আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আইন ব্যবহার করে প্লাস্টিক উৎপাদন বন্ধ করা সম্ভব নয়, কারণ আমাদের জনবল নেই। একসঙ্গে কয়েক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করতে যে লোকবল প্রয়োজন তা আমাদের নেই। তবে আমি মন্ত্রী, তাই দায়িত্ব আমাকেই নিতে হবে। আমাদের একটি কমিটমেন্টের মধ্য দিয়ে এগুতে হবে। সাস্টেইনেবল ক্যাম্পেইন করতে পারলে আমরা ভালো কাজ করতে পারব।
প্লাস্টিক পরিবেশদূষণের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগে একবার বুড়িগঙ্গা খননের সময় শুনেছিলাম, যা উঠে এসেছে সবই প্লাস্টিক ব্যাগ। আমাদের প্রতিমন্ত্রী নিজেই অনেকবার প্লাস্টিকের ব্যাগের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়েছিলেন। এ পলিথিন ব্যাগ তৈরির পদ্ধতি এতটাই ভ্রাম্যমাণ যে এদের ধরা খুব মুশকিলের কাজ। আবার সামগ্রিকভাবে উৎপাদন বন্ধ করে দেব, সেটাও সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে আমাদের এগুতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাবারের সঙ্গে প্লাস্টিকের থালা, চামচ দেয়। এটা খুব ভয়ঙ্কর ব্যাপার। আমাদের খাদ্যচেইনে প্লাস্টিক ঢুকে গেছে। এটা নিয়ে পরিবেশ অধিদফতরকে দ্রুত কাজ করতে হবে।
আমাদের সমস্যার পেছনে জনসংখ্যা একটা বড় ফ্যাক্ট বলে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। ইউরোপের অনেক দেশে এত জনসংখ্যা নেই। এমনকি অনেক উন্নত দেশে এত জনসংখ্যা নেই। সেই বিষয় মাথায় রেখে আমাদের কথা বলা উচিত। এই যে এত মানুষ প্রতিদিন ঢাকায় আসে, এদের সৃষ্ট বর্জ্য কোথায় যাবে? আমাদের সমস্যা সম্পর্কে আগে সচেতন হতে হবে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া দেশে পলিইথিলিন বা পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দ্যেশে পরিবহন ও ব্যবহার বন্ধ করেছে। তবে পরে পলি প্যাকেজিংয়ের বিকল্প না থাকায় প্যাকেজিং বা মোড়ক তৈরি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। এ কারণে পলি প্যাকেজিংয়ের সুযোগে পলিইথিলিন বা পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ আবার দৃশ্যমান হয়েছে। বর্তমানে দেশে পাটতন্তু থেকে প্রাপ্ত সেলুলোজ প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে জৈব পচনশীল পলিব্যাগ ও মোড়ক প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশে উদ্ভাবিত জৈব পচনশীল পলিব্যাগ ও মোড়ক আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমেই সহজলভ্য হওয়ায় সরকার এ ধরনের বায়ো-ব্যাগ ও বায়ো-প্যাকেজিং শিল্পকে উৎসাহ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রতী’র মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন সোনিয়া মুর্শেদ, বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আইইউসিএন বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির সদস্য হাসনা জসিমউদ্দিন মওদুদ প্রমুখ।