‘কিশোর ফাইয়াজের হাতে দড়ি বাঁধা আইনের ব্যত্যয়: রাষ্ট্রপক্ষ’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গতকালের শেয়ার বিজে, তা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের মনোযোগ কাড়বে বলেই ধারণা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজকে হাতে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করায় শিশু আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কোঁসুলি। সোমবার হাইকের্টের একটি বেঞ্চে এ-সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ এ কথা জানায়। পরে আদালত রিটটি খারিজ করে দেন।
নিম্ন আদালত ১৭ বছর বয়সী কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজকে রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিলে তা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। সোমবার তা আদেশের জন্য রাখা হয়। ওইদিন বিকালে আবার নিম্ন আদালত তার রিমান্ড আদেশ বাতিল করে। পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ বলেছিলেন, ‘ফাইয়াজকে রিমান্ডে নেয়া হবে না। এ ব্যাপারে শিশু আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
জš§নিবন্ধন অনুসারে, হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের জš§ ২০০৭ সালের ১৯ এপ্রিল। ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করেছে।
ফাইয়াজের আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, ‘আমরা শিশু আদালতে শিশু আইন-২০১৩-এর ২১ ধারা অনুযায়ী ফাইয়াজকে শিশু ঘোষণা করে শিশু আইনের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করে তাকে শিশু হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন।’
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাংশ দুর্নীতিগ্রস্তÑএমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বলা হয়ে থাকে, আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাংশ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবান্বিত ও ব্যাপক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা অপরাধীর পাশে দাঁড়িয়ে অপরাধীকে সুরক্ষা দেয়। স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসন এমন অবস্থা তৈরি করে, যারা অপরাধের শিকার, তাদের রীতিমতো ভুক্তভোগী হতে হয়, পালিয়ে বেড়াতে হয়। সরকার যদি প্রমাণ করতে চায় যে, দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন আছে তাহলে সব হত্যাকাণ্ডের দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথা সরকারের ওপর দেশবাসীর অনাস্থা তৈরি হবে। বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর আস্থাহীনতার কথা বিচারকদের কাছ থেকেই শোনা যায়।
অতি উৎসাহী কোনো কর্মকর্তার উদ্দেশে হাইকোর্টকে বলতে হয়েছে, জাতিকে নিয়ে মশকরা করবেন না। কোর্ট বলেন, টিভিতে দেখেছি, ‘এই আপ্যায়িত ব্যক্তিরা কাঁটা চামচ দিয়ে খাচ্ছেন।’ একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’ আমরা বিশ্বাস করি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্র্তাব্যক্তিারা আত্মমূল্যায়ন করবেন এবং দায়িত্বশীল আচরণ করবেন।