নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ চেম্বার আদালতে আটকে গেছে। এর ফলে তার সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনে কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসাইন হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেন। চেম্বার আদালতের এ আদেশের কয়েক ঘণ্টা আগে হাইকোর্ট আইনসচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছিল।
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের দায়িত্ব পাওয়া জহিরুল হকের ৭ আগস্ট অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা থাকলেও তার আগের দিন তাকে একই পদে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ দেয় সরকার। তার ওই নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ-উজ জামান।
তার যুক্তি ছিল, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগে সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ লাগে। কিন্তু এক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। এছাড়া আইনসচিব পদে জুডিশিয়াল সার্ভিসের বাইরের কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া যায় না। আইনসচিব যেহেতু অবসরের বয়সে চলে গেছেন, তাই তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসে নেই। তাছাড়া আপিল বিভাগের এক রায় অনুযায়ী ওই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগেরও কোনো সুযোগ নেই বলে যুক্তি দেওয়া হয় রিটে।
ওই রিটের ওপর শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ গত ৮ আগস্ট রুল জারি করেন।
জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তার যোগদানপত্র গ্রহণের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থসচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (প্রশাসন-১) রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ ওই রুলের জবাব দেওয়ার জন্য দুই দফা সময় নেওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে আবারও সময়ের আবেদন করলে আদালত নতুন করে সময় না দিয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ওই আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়। রাষ্ট্রপক্ষ ওই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে গেলে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন। এ সময় রিটকারীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন। আইনসচিবের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।