Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 7:21 pm

আইপিইএফ সম্পর্কে আরও তথ্য চেয়েছে ঢাকা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আইপিইএফ) সম্পর্কে আরও তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক আলোচনায় এ বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি ও পরিবেশ-বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি হোসে ডবিøউ ফার্নান্দেজ বৈঠকে সহ-সভাপতিত্ব (কো-চেয়ার) করেন। দিনব্যাপী বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীন, উম্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ে উভয় দেশ একই ধারণা পোষণ করে। মে মাসে যাত্রা শুরু হওয়া আইপিইএফ সম্পর্কে বৈঠকে বাংলাদেশকে অবহিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এর উত্তরে বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন এবং ডিকার্বোনাইজেশন পিলার সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে চায়। এছাড়া সমুদ্র সম্পদ আহরণ এবং সুনীল অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কারিগরি সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্সিং করপোরেশন (ডিএফসি) বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে। কিন্তু শ্রম পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে অর্থায়ন করতে পারে না সংস্থাটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো প্রকল্পে ডিএফসি তহবিল থেকে অর্থ পাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এর উত্তরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বলা হয়, বিষয়টি তারা বিবেচনা করবে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) যে রোডম্যাপ বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে, সেটির বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

শ্রম সংস্কার এবং আইএলও রোডম্যাপ বাস্তবায়নের জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ দ্রæততার সঙ্গে নেয়া হবে এবং অন্যান্য বিষয়, যেমন শ্রমিকদের সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার উন্নয়ন করারও প্রতিশ্রæতি দিয়েছে বাংলাদেশ।

এদিকে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উপদেষ্টা সালমান রহমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের অগ্রাধিকারপূর্ণ প্রবেশ, পণ্য উৎপাদনে ও টেকনোলজি ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকতর বিনিয়োগ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ইন্টারন্যাশনাল (ডিএফসি) অর্থায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য একক অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক ফ্রিল্যান্সারের সুবিধা গ্রহণ করে হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করেন।

উভয় পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য শক্তি, সমুদ্র ও সুনীল অর্থনীতি, কভিড-১৯, পর্যটন ও হসপিটালিটি এবং বেসামরিক বিমান চলাচলের বিষয়ে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে। ঢাকা ও নিউইয়র্কের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট আবার চালু করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করে। উভয় দেশের প্রতিনিধিরা দ্রুত ফ্লাইট আবার চালু করার জন্য একযোগে কাজ করার ব্যাপারে সম্মত হন।

আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে উভয় পক্ষ ঐকমত্য পোষণ করে। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

উভয় পক্ষ ২০২৩ সালে ঢাকায় সুবিধাজনক সময়ে তৃতীয় অর্থনৈতিক আলোচনার আয়োজন করতে সম্মত হয়।

বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বেগম শামসুন নাহার, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলামসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।