Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 4:57 am

আইপিও’র অর্থ ব্যবহার শুরু করেছে নিউলাইন ক্লথিংস

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ পরিকল্পনা অনুযায়ী যথাযথভাবে ব্যয় করার কাজ শুরু করেছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি নিউ লাইন ক্লথিংস লিমিটেড। তবে কোম্পানি কারখানা সম্প্রসারণের পরিকল্পনায় সংশোধন আনতে চায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, এরই মধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী কোম্পানি একটি ফ্লোর অটোমেটিক হাইটেক জ্যাকেট ফ্যাক্টরিতে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। এছাড়া নিউলাইন ক্লথিংস এরই মধ্যে ছয় লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ মার্কিন ডলারের বা পাঁচ কোটি ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৫৬ টাকার এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলেছে। কোম্পানিটি সব মেশিনারিজ জাপানের বিখ্যাত ব্র্যান্ড জুকি থেকে কিনবে। তাছাড়া কোম্পানিটি প্রস্তাবিত অটোমেশন প্রকল্পে আরও চার কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫৬ টাকা যোগ করবে। এ হিসাবে অটোমেশন প্রকল্পে মোট ১৫ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার ১১৬ টাকা বিনিয়োগ করবে। এছাড়া কোম্পানিটি কারখানা সম্প্রসারণের পরিকল্পনায় সংশোধন আনতে সাত কোটি ৬৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৯০ টাকার মধ্যে তিন কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৪ টাকা সংস্কারের কাজে ব্যবহার করবে, যাতে কোম্পানিটি অ্যাকর্ড স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী শতভাগ স্কোর অর্জন করতে পারে। আরেকটি ১৮ হাজার বর্গফুটের ভবনের জায়গায় মেজনাইন ফ্লোর নির্মাণ করা হবে। কোম্পানিটির অবশিষ্ট চার কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫৬ টাকা উৎপাদন প্রক্রিয়াতে অটোমেশনের জন্য বিনিয়োগ করা হবে। আর আগামী ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করা হবে।

অটোমেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানিটির প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ আয় বাড়বে এবং ১৫ থেকে ২০ শতাংশ খরচ কমবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

সম্প্রতি বস্ত্র খাতের নিউলাইন ক্লোথিংস লিমিটেডের ১৯তম বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ ও সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোম্পানিটির ১৯তম এজিএম আগামী ৩০ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় এজিএম অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা তিন শতাংশ নগদ ও সাত শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে এক টাকা ১২ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি এনএভি দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৫৫ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে চার টাকা ৭৭ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর, মৌচাক, কামরাঙ্গাচালা ও কচুয়াকুরিতে অবস্থিত ১৯৪৫নং প্লটে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০১৯) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪৫ পয়সা, আগের বছর একই সময় যা ছিল ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ১৩ পয়সা কমেছে। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য হয়েছে ২৫ টাকা, যা ২০১৯ সালের ৩০ জুন ছিল ২৪ টাকা ৫৫ পয়সা। আর এ প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৬৬ পয়সা, আগের বছর একই সময় যা ছিল ১৭ পয়সা।

২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এন’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটি। অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৬৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভে আছে ৯৩ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার রয়েছে ছয় কোটি ৯৯ লাখ। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩০ দশমিক ৮২ শতাংশ উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের, ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক এবং বিদেশি শূন্য দশমিক শূন্য চার ও ৫০ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ৫০ পয়সা বা দুই দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ লেনদেন হয় ১৭ টাকা ৩০ পয়সায়। লেনদেন শেষে সর্বশেষ দর দাঁড়ায় ১৭ টাকা ৫০ পয়সা। ওইদিন ৩৬ লাখ ৬৪ হাজার ৭৪৫টি শেয়ার এক হজার ৫৯৪ বার হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছয় কোটি ৪০ লাখ ২১ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারটির দর ১৬ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১৮ টাকা ৩০ পয়সায় ওঠানামা করে।