আইপিও নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে

পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হচ্ছে এর বেশিরভাগই দুর্বল। এসব কোম্পানিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি পুঁজিবাজারের প্রতিও তাদের আগ্রহ কমছে। এ অবস্থার নিরসনের জন্য দরকার ভালো মানের আইপিও। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে আলোচকদের আলোচনায় এসব কথা ওঠে আসে।

হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক ফজলুল বারী এবং পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি ও সিইও মোহাম্মদ আহছান উল্লাহ।

ফজলুল বারী বলেন, আইপিও নিয়ে একটা তদন্ত হওয়া উচিত। আইপিও নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। কারণ ভালো মানের আইপিও আসছে কি নাÑতা নিয়ে বাজারে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এ পর্যন্ত আইপিওর মাধ্যমে যেসব কোম্পানি বাজার আসছেÑতা বেশিরভাগই দুর্বল কোম্পানি। কেন এ দুর্বল কোম্পানি বাজারে আসার জন্য অনুমোদন দেওয়া হলো। তাই এসব দোষী ব্যক্তিদের জনগণের সামনে নিয়ে আসুক এবং তাদের শাস্তি দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, বাজার ভালো করতে হলে বিনিয়োগকারীর আস্থার সংকট দূর করতে হবে। বাজারে অর্থপ্রবাহ বাড়ানো নিশ্চিত করুন। আর বাজারসংশ্লিষ্ট কোনো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রাখা যাবে না। বাজারে আস্থা ফেরানো জন্য কাজ করতে হবে। বিএসইসি, ডিএসই, ডিবিএ প্রভৃতি ভালো কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করতে হবে। এছাড়া ভালো পাঁচটি ইস্যুয়ার, পাঁচটি মার্চেন্ট ব্যাংক এবং পাঁচটি ব্রোকারেজ হাউজকে পুরস্কার দিতে হবে। এর পাশাপাশি বাজার নিয়ে যারা কারসাজি করে, তাদের মধ্যে থেকে শীর্ষ পাঁচজন দুর্নীতিবাজকে শাস্তি দেন। যদি এটি করা যায়, বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসতে বাধ্য হবেন। এ পর্যন্ত কোনো ভালো কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হয়নি। আবার মানি মার্কেটের ঋণখেলাপিদের পক্ষে বিভিন্নভাবে বারবার সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু একজন ভালো উদ্যোক্তা বা ভালো ঋণ পরিশোধকারীকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে কীভাবে পুঁজিবাজার ও মানি মার্কেট ভালো হবে।

অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আহছান উল্লাহ বলেন, সত্যিকার অর্থে, বর্তমানে পুঁজিবাজারের অবস্থা অনেক খারাপ। দিন দিন পুঁজিবাজার তলানিতে যাচ্ছে। সূচক, টার্নওভার এবং শেয়ারদর কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিনিয়োগকারী ও ব্রোকারেজ হাউজগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আসলে এটার মূল কারণ হচ্ছেÑবিনিয়োগকারীর আস্থার অভাব। তাই বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জনের জন্য বাজারসংশ্লিষ্টদের এক সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশেষ করে বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে। আসলে পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট রয়েছে। কারণ মানি মার্কেটে তারল্য সংকট থাকলে সেটার প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়ে। যে কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী না থাকার কারণে সেভাবে বাজারে ট্রেড ভলিউম হচ্ছে না। ট্রেড ভলিউম কমার কারণে  সূচকে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। কী কারণে বাজারের এ অবস্থা হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা বুঝে যাচ্ছেন। যখন বিনিয়োগকারীরা দেখছেন এখানে কোনো বিচার নেই, তাদের পুঁজি যে সামনে নিরাপদ থাকবে, সেটা নিয়ে তাদের মধ্যে এক ধরনের সংকট ঘনীভূত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাজারসংশ্লিষ্ট যতই ভালো পলিসি গঠন করা হোক না কেন অর্থাৎ যারা এ পলিসির সঙ্গে জড়িত, তাদের মানসিকতা যদি ইতিবাচক না হয়; সেক্ষেত্রে যতই ভালো পলিসি করা হয় না কেন বাজারের কোনো সুফল বয়ে আনবে না। তাই এজন্য দরকার পলিসি গঠনের পাশাপাশি যারা এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের মনমানসিকতা ইতিবাচকও ভালো হতে হবে। 

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০