আইপিও বন্ধ থাকলে কীভাবে ইকুইটির প্রবাহ বাড়বে?

আইপিও বন্ধ রাখা কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। বাজারে যদি ইকুইটি আসার প্রক্রিয়া চলমান না থাকে, তাহলে কীভাবে বাজারে ইকুইটির প্রবাহ বাড়বে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী।

হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, পুঁজিবাজারে এ বছরটি মোটেই ভালো যায়নি। ২০১০ সালে বাজারে মন্দা ছিল ঠিকই; কিন্তু ২০১৯ সালে আরও বেশি মন্দা ছিল। এতে অনেক বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনেছেন, তাদের সবার ইকুইটি নেতিবাচক। বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য এ পর্যন্ত অনেক কিছু করা হয়েছে; কিন্তু তাতেও বাজার ভালো হচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরে আসবে, ততক্ষণ বাজার ভালো হবে না। 

তিনি আরও বলেন, যখন বাজার খারাপ অবস্থানে থাকে, তখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলো বাজার থেকে শেয়ার কেনা শুরু করে। আবার যখন বাজার গতিশীল হয়, তখন তারা কিছু শেয়ার ছেড়ে দেয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর ভূমিকা বাজারে এমনটাই হওয়া উচিত। কিন্তু তাদের সে ভূমিকা দেখা যায় না। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। কেন এরকম হচ্ছেÑএটি ভালো করে অনুসন্ধান করা দরকার। আরেকটি বড় বিষয় হচ্ছে, গত কয়েক বছরে প্রায় ১০০ কোম্পানি বাজারে এসেছে। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে কতজন লাভবান হয়েছেন সেটাও দেখার বিষয়। বাজার ভালো করতে রাষ্ট্রায়ত্ত, বেসরকারি ও বহুজাতিক ভালো মানের কোম্পানি আনতে হবে। অনেক স্বল্পমূলধনি কোম্পানির প্রসপেক্টাস জমা দেওয়া মাত্রই বাজারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মৌলভিত্তির কোম্পানি ওয়ালটন রোডশো করে বাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছে। কিন্তু এখনও সেটি বাজারে আলোর মুখ দেখছে না। আমরা যদি ভালো কোম্পানিকে উৎসাহিত না করি এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি তাদের কার্য পরিচালনায় ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বাজার ভালো হওয়ার আশা করা যায় না। কিন্তু আবার যখন কোনো একটি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, তখনই নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সক্রিয় হতে দেখা যায়। বাজার দীর্ঘদিন ধরে খারাপ অবস্থানে রয়েছে এবং বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। এদিকে কারও নজরদারি নেই। 

মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, গত ১০ বছর ধরে পুঁজিবাজারের সূচক নিচের দিকে যাচ্ছে। বিশ্বের কোনো পুঁজিবাজারে এরকম অবস্থা পাওয়া যাবে না। আমাদের বাজার উল্টো দিকে যাচ্ছে। আসলে বাজার টিকে থাকে আস্থার ওপর। সবচেয়ে বেশি শঙ্কার বিষয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তারা মনে করছেন, স্বল্প সময়ে এ বাজার ভালো হচ্ছে না। যদি সেটা মনে না করতেন, তাহলে তারা শেয়ার বিক্রি করতেন না। কারণ, অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করে তারা বাজারে বিনিয়োগ করেন। এখন মৌলভিত্তির শেয়ারের দর অনেক নিচে। বাজার যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হতো, তাহলে এ অবস্থা হওয়ার কথা নয়। আইপিও বন্ধ রাখা বাজারের জন্য কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। বাজারে যদি ইকুইটি আসার প্রক্রিয়া চলমান না থাকে, তাহলে কীভাবে বাজারে ইকুইটির প্রবাহ বাড়বে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০