নিজস্ব প্রতিবেদক: অডিটর নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদনকৃত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন রিভিউ করবে এ প্যানেল। এ জন্য দেশের গ্রহণযোগ্য অডিটরদের মধ্যে থেকে ১৮ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে এ প্যানেলে রাখা হয়েছে।
এখন থেকে তালিকাভুক্তিতে ইচ্ছুক নতুন আবেদনকৃত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন রিভিউ করা হবে, যারা ইতোমধ্যে আবেদন করেছে তাদের নয়। ডিএসইর সর্বশেষ পরিচালনা পর্ষদে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রিভিউ কমিটিতেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনকে সরিয়ে স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মিনহাজ মান্নান ইমনের সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের এলিজিবল ইনভেস্টর (ইআই) হিসেবে আইপিও সাবস্ক্রিপশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন যাচাই করতে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন মিনহাজ মান্নান। এটি ডিএসইর ডিমিউচুয়ালাইজেশনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ জন্য নিরপেক্ষতা বজায় ও অভিযোগমুক্ত রাখতে স্বতন্ত্র এক পরিচালককে এ প্যানেলে আনা হলো।
আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসা কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। সাম্প্রতিক সময়ে এ অভিযোগের সত্যতাও মেলে। এ জন্য আবেদনকৃত কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পুনঃযাচাই (রিভিউ) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদ। এরই ধারাবাহিকতায় এ টিমকে সহায়তার জন্য বিভিন্ন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ফার্মের প্রতিনিধি ও আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষকদের সমন্বয়ে ১৮ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করেছে ডিএসই।
জানা গেছে, একটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন রিভিউ করতে সর্বোচ্চ দুজন বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে পারবেন। তাছাড়া বিশেষজ্ঞ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সব সদস্যকে পর্যায়ক্রমে নির্বাচন করা হবে। ডিএসইর লিস্টিং ম্যানেজার আইপিও রিভিউ টিম ও ম্যানেজমেন্ট প্যানেলের মধ্যে সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকবেন। আর এক্সচেঞ্জটির হেড অব লিস্টিং অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট (এলএডি) ও করপোরেট গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কমপ্লায়েন্স (সিজিএফআরসি) প্রতিটি আইপিও বিশেষজ্ঞ প্যানেলে এক্স অফিসিও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
ডিএসইর আইপিও বিশেষজ্ঞ প্যানেলে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের সংগঠন ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) প্রেসিডেন্ট কিংবা ভাইস প্রেসিডেন্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টদের সংগঠন ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) প্রেসিডেন্ট কিংবা ভাইস প্রেসিডেন্ট, চার্টার্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট (সিএফএ) সোসাইটির প্রেসিডেন্ট কিংবা ভাইস প্রেসিডেন্ট, মো. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী, নাসির উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ফার্মের প্রতিনিধি নাইমা মেহরীন, ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোলার মো. আবদুল ওয়াহাব মিয়া, রহমান রহমান হক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের প্রতিনিধি আশরাফ-উজ-জামান, স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের স্বত্ব¡াধিকারী স্নেহাশীষ বড়–য়া এফসিএ, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের সাব্বির আহমেদ, হাওলাদার ইউনুস অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের আলী আমজাদ চৌধুরী।
বাকিদের মধ্যে একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের প্রতিনিধি মো. রোকনুজ্জামান, এ কাশেম অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের মোহাম্মদ মোতালেব হোসাইন, নুরুল ফারুক হাসান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের মো. ফারুক উদ্দিন আহাম্মেদ, এমএমএইচ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের মো. মাহমুদ হোসাইন, এমএম রহমান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন ও বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) অজিত কুমার পালের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জানা গেছে, এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করবে ডিএসইর রিভিউ কমিটি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই নাম চূড়ান্ত করা হবে। সেক্ষেত্রে কেউ বাদ গেলে নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।