আইপিও-শূন্য নভেম্বরে থমকে গেছে বিও খোলার প্রবণতা

মুস্তাজিুর রহমান নাহিদ : পুঁজিবাজারে নতুন কোনো কোম্পানির ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) না থাকায় নভেম্বরে অনেকটাই থমকে গেছে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা। আগের মাসের (অক্টোবর) চেয়ে নভেম্বরে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সংখ্যা কমেছে সাড়ে চার গুণ। নভেম্বরে মোট বিও খোলা হয় ১৬ হাজার। এর আগের মাসে বিও অ্যাকাউন্ট বাড়ে ৩৪ হাজার। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, নভেম্বরে মোট বিও খোলা হয়েছে ১৬ হাজার ৩০০। বাজারে আইপিও না থাকায় এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তথ্যানুযায়ী বর্তমানে দৈনিক গড়ে খোলা হচ্ছে ৭৪১টি। এর আগের মাসে যার সংখ্যা ছিল দৈনিক এক হাজর ৩০০টি। গত আগস্টে বিও সংখ্যা বাড়ে ২৪ হাজার। এর আগের মাসগুলো অর্থাৎ জানুয়ারি ২০১৭ থেকে জুলাই পর্যন্ত গড়ে ৫ থেকে ৬ হাজারের মতো বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। বর্তমানে মোট বিও সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ১০ হাজার ৩০৪টি। এর মধ্যে পুরুষদের বিও সংখ্যা ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৪৪১টি। অন্যদিকে নারীদের বিও রয়েছে সাত লাখ ১৮ হাজার ১৭৭টি। এছাড়া কোম্পানির বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে ১১ হাজার ৬৮৬টি।

জানা যায়, প্রাইমারি মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো থাকায় জনগণের এর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। যে কারণে বিগত মাসগুলোয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে। কিন্তু গত মাসে কোনো আইপিও না থাকায় বিও অ্যাকাউন্টে ভাটা পড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, গত মাসগুলোয় বিও বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ সম্প্রতি বাজারে আসা কোম্পানির আইপিওতে চড়া দর পাওয়া।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিবিএস কেবল্সের শেয়ারে দর পেয়েছেন প্রত্যাশার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। একইভাবে আমরা নেটওয়ার্কের আইপিওতেও প্রত্যাশার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দরে শেয়ার বিক্রি করতে সক্ষম হন বিনিয়োগকারীরা। ১০ টাকার শেয়ার ১৫০ টাকার ওপরেও বিক্রি করেন আইপিও বিজয়ীরা।

এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, প্রাইমারি মার্কেট থেকে যখন বিনিয়োগকারীরা ভালো মুনাফা করতে পারেন, তখন এই মার্কেটের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়ে। যে কারণে এরকম সময়ে বিও সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাব রক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়। এর আগে পঞ্জিকা বর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এই ফি জমা নেওয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুন মাসে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল।

এর আগে সময়মতো বিও ফি না দেওয়ায় গত বছর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তিন লাখের বেশি বিও। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রধানত দুই কারণে এবার অসংখ্য বিও বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে বাজারের মন্দা পরিস্থিতি, অন্যটি প্রাইমারি মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা না পাওয়া। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা ৫০০ টাকা দিয়ে বিও নবায়ন করেননি। যার ফলে এসব অ্যাকাউন্ট বাতিল হয়ে গেছে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০