আইফোন টেন

অ্যাপলের নতুন চমক আইফোন টেন এখন বাজারে। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের অপেক্ষার পালা শেষ করে গত নভেম্বরে বাজারে এসেছে আইফোন টেন। অ্যাপলের ১০ বছরপূর্তি উপলক্ষে বাজারে আনা হয় বিশেষ মডেলের এই ফোনটি। ৯৯৯ মার্কিন ডলারের এই ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনটিতে রয়েছে বেশ কিছু আকর্ষণীয় ফিচার, যে কারণে অনেকেই ফোনটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আবার কিছু কারণে অনেকেই আইফোন টেন কিনতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশেষ এ ফোনটির সুবিধা ও অসুবিধা।

 

সুবিধা

আইফোন টেনের অন্যতম সুবিধাÑএতে রয়েছে ফেস আইডি ফিচার, যা নতুন ট্রুডেপাথ ক্যামেরার মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ এই ফিচারটি আইফোন ৮ ও ৮ প্লাসে নেই। আইফোন টেন আনলক করতে টাচ আইডির বদলে ফেস আইডি ব্যবহƒত হবে। অ্যাপল পের মতো ফিচার ব্যবহার করতে এটি কাজে লাগবে। আইফোন টেনে যে সেন্সর, ক্যামেরা, চিপ ও ডট প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়েছে, তা অন্য আইফোনে নেই। এতে ব্যবহারকারীর মুখের ওপর ৩০ হাজার অদৃশ্য ডটের মাধ্যমে মুখের মানচিত্র তৈরি করা হয়, যা বিশেষ ইনফ্রারেড রশ্মির মাধ্যমে অন্ধকারে চেহারা চিনতে সাহায্য করে।

বিশেষ এই ফোনটির আরেকটি চমক হলো, এজটুএজ পাঁচ দশমিক আট ইঞ্চি মাপের ওএলইডি ডিসপ্লে। এটাই প্রথম ওএলইডি ডিসপ্লেযুক্ত আইফোন। অন্য সব ফোনের চেয়ে এর পিক্সেল ঘনত্ব বেশি। ২৪৩৬–১১২৫ পিক্সেল রেজুলেশনের ডিসপ্লেতে প্রতি ইঞ্চিতে পিক্সেল ঘনত্ব ৪৫৮ পিপিআই। আইফোন ৮ প্লাসে পিক্সেল ঘনত্ব ৪০১ পিপিআই। এটি অ্যাপলের প্রথম এইচডিআর-রেডি স্মার্টফোন। তাছাড়া আইফোন টেন ডলবিভিশন সমর্থন করে।

আইফোন টেনে রয়েছে বিশেষ পোর্ট্রেট মোড। এছাড়া নতুন লাইটিং ইফেক্ট রয়েছে ফোনটিতে। আইফোন টেনের পেছনের ক্যামেরা আইফোন ৮ ও ৮ প্লাসের চেয়ে উন্নত। আইফোন টেন ও ৮ প্লাসে ১২ মেগাপিক্সেল ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল ও টেলিফটো ক্যামেরা, অপটিক্যাল জুম, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল অ্যাপারচার এফ/১.৮ আছে। তবে আইফোন টেনে টেলিফটোতে অ্যাপারচার এফ/২.৪ থাকায় এটি আইফোন ৮ প্লাসের চেয়ে উন্নত। আইফোন ৮ প্লাসের টেলিফটোতে অ্যাপারচার এফ/২.৮। অ্যাপারচার কম থাকায় কম আলোয় উন্নত ছবি তুলতে সক্ষম আইফোন টেন। এছাড়া এতে ডুয়াল অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন থাকায় ছবি হবে ঝকঝকে।

আইফোন টেনের আরেকটি বিশেষ সুবিধা হলো, অ্যানিমোজি ফিচার। অ্যাপল কেবল আইফোন টেনের জন্য অ্যানিমোজি নামের ফিচার উš§ুক্ত করেছে। এর মাধ্যমে অ্যাপলের নতুন ফেসিয়াল রিকগনিশন (চেহারা শনাক্তকরণ) সফটওয়্যার ব্যবহার করে যেকোনো চেহারাকে অ্যানিমেটেড ইমোজিতে রূপান্তর করা যায়। মোট ১২ ধরনের অ্যানিমোজি এই ফোনটিতে প্রকাশ করা হয়েছে।

 

অসুবিধা

আইফোন টেনের প্রথম সমস্যা হলো এর নতুন ইন্টারফেস। আইফোনের বড় সুবিধা হচ্ছে এর ব্যবহারবান্ধব ইউজার ইন্টারফেস। সহজে ব্যবহারযোগ্য ইন্টারফেসের কারণে অনেকেই আইফোন পছন্দ করেন। কিন্তু আইফোন টেনে তা বদলে গেছে। এতে ফেসআইডি যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি হোম বাটন বিদায় নিয়েছে। এতে আইওএস ১১ থাকলেও নতুন ইন্টারফেস যুক্ত হয়েছে। আগের সোয়াইপ ও জেশ্চার আইফোন টেনে কাজ করবে না। অ্যাপ খোলা, কন্ট্রোল সেন্টার ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে। অর্থাৎ নতুন আইফোন ব্যবহার জটিল।

বিশেষ এই ফোনটিতে নতুন প্রসেসর নেই। অর্থাৎ  আইফোন ৮ ও আইফোন ৮ প্লাসে ও আইফোন টেনে একই প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। তবে অ্যাপলের দাবি, এ প্রসেসরটি আগের আইফোন ৭ ও ৭ প্লাসে থাকা এ ১০ প্রসেসরের চেয়ে ২৫ শতাংশ দ্রুতগতির।

আইফোন টেনের জন্য বিশেষ আলাদা কোনো ফিচার নেই। আইফোন ৮ ও ৮ প্লাসের অনেক ফিচার রয়েছে আইফোন টেনে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ওয়ারলেস চার্জিং। একই চিপসেট, পানি ও ধুলা প্রতিরোধী ফিচার, স্টোরেজের দিক থেকে বিশেষ কিছু নয় আইফোন টেন।

ঝুঁকিও কম নয়। এর অল-গ্লাস নকশা দেখতে সুন্দর হলেও এটি ব্যবহারে বেশি সতর্ক থাকতে হয়। দুই দিকে কাচ থাকায় ব্যবহারকারীকে ফোনের দুই পৃষ্ঠ সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।

 

হাসানুজ্জামান পিয়াস

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০