কমলাপুর আইসিডি কাস্টম হাউসে শুল্কায়ন বন্ধ

## কাস্টম হাউস ও কাস্টমস গোয়েন্দার হয়রানির প্রতিবাদে কাজ বন্ধ

## দাবি মেনে না নিলে লাগাতার কাজ বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও কাস্টম হাউসের হয়রানির প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করেছে দিয়েছে সিএন্ডএফ এজেন্টরা। রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সিএন্ডএফ এজেন্টরা কাজ বন্ধ রেখেছেন। তবে কোন প্রকার মিছিল বা হট্টগোল হয়নি। কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তা, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কয়েকজন আমদানিকারক শেয়ার বিজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানান, ছোট বন্দর হওয়ায় এখানে মূলত বাণিজ্যিক আমদানিকাররা পণ্য আমদানি করেন। ফলে প্রতিটি বিল অব এন্ট্রিতে শতভাগ শুল্কায়নের মাধ্যমে পণ্য খালাস হয়। আইসিডি কাস্টম হাউসে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫০-৬০টি বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়। এর মধ্যে কাস্টম হাউস ও কাস্টমস গোয়েন্দা প্রতিদিন ২০-২৫টি লক করে দেয়। কিছু বিল অব এন্ট্রিতে অনিয়ম হয়। কিন্তু বেশিরভাগ বিল অব এন্ট্রিতে সামান্য অনিয়ম পেলেই লক করে দেওয়া হয়। আর স্বাভাবিকভাবে শুল্কায়ন হলে একটি পণ্য শুল্কায়ন শেষে খালাস হতে ৩-৪ দিন লাগে। তবে বিল অব এন্ট্রি লক করা বা কোন অভিযোগ উঠলে সে পণ্য খালাস নিতে সপ্তাহ পার হয়ে যায়। এতে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া করোনার কারণে আমদানি অনেক কমে গেছে। পণ্য আগের চেয়ে অনেক কম আমদানি হচ্ছে। এতে কমে গেছে রাজস্ব আহরণ।

তারা আরও জানান, একটি পণ্য কাস্টম হাউস শুল্কায়ন শেষে খালাসের অনুমতি দিলে অনেক সময় কাস্টমস গোয়েন্দা লক করে দেয়। আবার তথ্য থাকলে কাস্টমস গোয়েন্দা বিল অব এন্ট্রি দাখিলের আগেই লক করে রাখে। সামান্য অনিয়ম পেলেই দুই থেকে তিন শতাধিক পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। বিলম্বে পণ্য খালাসে আমদানিকারকদের অতিরিক্ত চার্জ গুণতে হয়। অনেক সময় সিএন্ডএফ এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। এতে পণ্য খালাসে যেমন সময় লাগে, তেমনি রাজস্ব আহরণ কম হয়। কাস্টম হাউস ও কাস্টমস গোয়েন্দা হয়রানি থেকে বন্ধ করতে সিএন্ডএফ এজেন্টরা সম্প্রতি এনবিআরের দ্বারস্থ হলেও কোন সুরাহা হয়নি। ফলে তারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কাজ বন্ধ রেখেছে।

কয়েকজন কাস্টমস কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, পণ্য বিষয়ে গোপন তথ্য থাকলে বিল অব এন্ট্রি দাখিলের আগেই তা লক করা হয়। আবার বিল অব এন্ট্রি দাখিলের পরও লক করা হয়। কাস্টম হাউস বা কাস্টমস গোয়েন্দা কোন তথ্য ছাড়া পণ্য লক করে। যেসব পণ্য লক বা আটক করা হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনিয়ম পাওয়া যায়। কাস্টমস আইন ও এনবিআরের আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এতে কাউকে হয়রানি করা হয় না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টদের কারণেই পণ্য খালাসে সময় বেশি লাগে।

আন্দোলন বিষয়ে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আলম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন কাস্টমসের কিছু অনিয়ম ও কাস্টমস গোয়েন্দার হয়রানির বিরুদ্ধে। এ কাস্টম হাউসে মাত্র ৫০-৬০টি বিল অব এন্ট্রি পড়ে। এর মধ্যে কি আর অনিয়ম হবে?’ তিনি বলেন, ‘আমরা আইসিডি কমিশনারের সাথে দেখা করেছি। তিনি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’ ফারুক আলম বলেন, ‘আমরা কাজ বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছি। কোন প্রকার মিছিল, ভাংচুর বা হট্টগোল হবে না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর‌্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে।’

এ বিষয়ে রোববার বিকেলে আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস কমিশনার মোবারা খানম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘কাস্টম হাউসের কাজ ভালোভাবেই চলছে। এর মধ্যেই তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশন থেকে আমার কাছে এসেছে। তারা শুল্কায়ন বিষয়ে ৬-৭টি সমস্যা ও দাবি তুলে ধরেছেন। আমি তাদের বিষয়গুলো দেখার আশ্বাস দিয়েছি।’

কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালক মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর অসুস্থ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কাস্টমস গোয়েন্দার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেয়ার বিজকে বলেন, ‘গোপন ও সঠিক তথ্য থাকলেই কেবল পণ্য লক বা আটক করা হয়। এখন পর্যন্ত যেসব চালান আটক করা হয়েছে সব চালানে কিছু না কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। আমরা এনবিআরের নির্দেশে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।’

###

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০