আইসিবি এএমসিএল ফান্ড অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনুমোদন পেলো আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ডের খসড়া প্রসপেক্টাস। একই সঙ্গে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার তথ্যাদি স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গতকাল বুধবার ৫৯৬তম কমিশন সভায় ফান্ডটির অনুমোদন ও তথ্যাদি প্রকাশের নির্দেশ দেয়।

মিউচুয়াল ফান্ডটির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১০০ কোটি টাকা। ফান্ডটির উদ্যোক্তার অংশ ৫০ কোটি টাকা। সব বিনিয়োগকারীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা, যা ইউনিট বিক্রির মাধ্যমে উত্তোলন করা হবে।

ফান্ডটির অভিহিত মূল্য হবে ১০ টাকা। ফান্ডের উদ্যোক্তা অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। আর সম্পদ ব্যবস্থাপক আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। ফান্ডটির ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান হলো ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ।

কমিশনের সভায় ফান্ডটির খসড়া অনুমোদন ছাড়াও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার তথ্যাদি স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

বিনিয়োগকারীদের যেসব তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা হলো পুঁজিবাজার বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যদের মধ্যে নিন্মোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে জেনে বুঝে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করুন। মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি যাচাইয়ের জন্য নিন্মোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা রাখুন: প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, সম্পদের পরিমাণ এবং তার যথাযথ ব্যবহার, নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান এবং লভ্যাংশের হার, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা করে এবং শেয়ারহোল্ডারদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়, মুনাফা শেয়ারপ্রতি আয়, শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদের পরিমাণ এবং এর ধনাত্মক প্রবৃদ্ধি, সঠিক সময়ে সব মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ এবং সিকিউরিটিজ-সংক্রান্ত সব আইনকানুন, বিধিবিধান পরিপালন করে কোম্পানি পরিচালনা।

বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিবেচ্য বিষয়গুলো: বিগত সময়ে মূল্য ওঠানামা পর্যালোচনা, বাজার, সেক্টর ও সিকিউরিটিজের মূল্য বা আয় অনুপাত পর্যালোচনা, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে পুঁজি বণ্টনের মাধ্যমে পরিকল্পনা, বিভিন্ন সেক্টর এবং বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের মাধ্যমে পোর্টফোলিও গঠন করে বিনিয়োগের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, বিনিয়োগসংক্রান্ত বিধিবিধান এবং লেনদেনসংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলা।

বিনিয়োগকারীদের জন্য করণীয় : আশাতিরিক্ত লাভজনক বিনিয়োগ প্রলোভন থেকে সাবধান থাকুন, আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যক্তিগত বাজেট ও আর্থিক পরিকল্পনা করবেন, বিভিন্ন বিনিয়োগ পণ্য ও খাতের ঝুঁকি সম্পর্কে জানুন, সঞ্চয় থেকে কেন সিকিউরিটিজ বা খাতে কত বিনিয়োগ করবেন সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিন, পর্যাপ্ত বিচার বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিন, আপনার হিসাবে রক্ষিত সিকিউরিটিজ ও অর্থের বিষয়ে সচেতন থাকুন, বিনিয়োগসংক্রান্ত আইনকানুন সম্পর্কে অবগত হয়ে বিধিনিষেধ মেনে চলুন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানির আর্থিক অবস্থার গতিময়তা, ব্যবস্থাপনা এবং অন্যান্য বিষয়ে ধারণা নিন, বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে বিনিয়োগ হিসাব খুলুন, বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত আপনি নিজে নিন, প্রয়োজনে পেশাদার বিনিয়োগ বিশ্লেষকদের সহায়তা নিন, আপনার আর্থিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের মেয়াদ নির্ধারণ করবেন, ঋণ গ্রহণের আগে আপনার ঋণ পরিশোধের সংগতি এবং ঋণের শর্তগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন, আপনার কোনো অভিযোগ থাকলে স্টক এক্সচেঞ্জ বা কমিশনকে অবহিত করবেন, সময়মতো বিনিয়োগ এবং বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্জনীয় : সঞ্চয়ের পুরোটাই এ খাতে বিনিয়োগ নয়। আপনার সংগতির অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ নয়, কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে বিনিয়োগ নয়, গুজবের ভিত্তিতে বিনিয়োগ নয়, বিনিয়োগ মানে নিশ্চিত লাভ এ ধারণায় বিনিয়োগ নয়, অনিশ্চিত তথ্য বা চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিনিয়োগ নয়, অযৌক্তিক অতিরিক্ত দরে বিনিয়োগ নয়, প্রতিটি বিনিয়োগে ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে, ঝুঁকি বিশ্লেষণ না করে বিনিয়োগ নয়, জ্ঞাতসারে বেআইনি বা অননুমোদিত কোনো খাতে বিনিয়োগ নয়, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে বিনিয়োগ নয়, না বুঝে কোনো কাগজে স্বাক্ষর নয়, অনুমোদনহীন দলিল বা ফরমে স্বাক্ষর নয়, প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়া ইস্যুকৃত কোনো সিকিউরিটিজ বা চুক্তিপত্রে আয়ের হার অনেক বেশি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও বিনিয়োগ নয়।