Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 12:39 pm

আওয়ামী লীগকে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাভ নেই: শেখ হাসিনা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই বলে জানিয়ে আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সরকারের পতনের কথা স্মরণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আবার নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, নৌকায় ভোট দিলে ‘হয় উন্নয়ন’ আর বিএনপি করে ‘দুর্নীতি, মানুষ খুন’।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত টানেল উদ্বোধন করে আনোয়ারায় কর্ণফুলী ইপিজেডের মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: বাসস।

সরকার পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে একই দিন রাজধানীতে বিএনপি বড় কর্মসূচি পালন করে। দলটি আজ (গতকাল) থেকে আন্দোলনের ‘মহাযাত্রা’র ঘোষণাও দিয়ে রেখেছে।

পুলিশের কাছ থেকে অনুমোদন না নিয়ে সমাবেশ করতে নেমেছিল জামায়াতে ইসলামীও।

এই দুই সমাবেশস্থলের অদূরে জমায়েত ছিল আওয়ামী লীগেরও। সকাল থেকে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও গতকাল দুপুরের আগে কাকরাইল মোড়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। এরপর বিএনপির সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায়, রোববার হরতালের ডাক দেয় দলটি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বিএনপি সরকারের পতন ঘটাবে, নানা রকম আন্দোলনের হুমকি দেয়। একটা কথা স্পষ্ট বলতে চাই, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। ওই সমস্ত ভয়ভীতি আওয়ামী লীগকে দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।’

১৯৯৬ সালের আন্দোলনের মুখে বিএনপি সরকারের পতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল বলেই ১৫ ফেব্রুয়ারি তাকে বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে হটিয়েছিল, এটা তাদের মনে রাখা উচিত। এরা ভোট চোর, জনগণের অর্থ

চোর, খুনি। বিএনপি-জামায়াত মানেই হচ্ছে খুনি, হত্যাকারী, সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ শান্তিতে বিশ্বাস করে, আওয়ামী লীগ উন্নয়নে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। এই বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না, এটা হলো বাস্তবতা।’

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সাজা হওয়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপির কাজ হচ্ছে মানুষ খুন করা, লুটপাট করা, দুর্নীতি করা। খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ এতিমদের না দিয়ে এক ব্যাংকে রেখে দিয়ে সেই অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তার ছেলে তারেক রহমান বিদেশে পালিয়ে আছে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। আর কোটি কোটি টাকা মানি লন্ডারিং করেছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত, সে কারণে সে সাজাপ্রাপ্ত। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, সেই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।’

১৯৭৫ সালে বাবা-বা ভাইদের হত্যা এবং এরপর জিয়াউর রহমানের শাসনামলে খুনিদের রক্ষা করে সংবিধানে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের কারণে বিচার না পাওয়া, ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর তার ওপর বারবার আক্রমণের কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এসেছি এমন একটা সময় যখন খুনির দল পাওয়ারে, যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায়। বারবার আমার ওপর আক্রমণ। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আমার ওপরে গুলি হয়েছিল, ৩০ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী মারা গিয়েছিল। বারবার বাধা পেয়েছি, নিজের জীবনের কোনো মায়া করিনি। একটি কথাই শুধু ভেবেছি, বাংলাদেশের মানুষ, যে মানুষের জন্য আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন, যে মানুষের জন্য আমার বাবা জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছেন, যে মানুষের জন্য আমার বাবা-মা জীবন দিয়ে গেছেন, সেই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশের কোনো মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবে না, ভূমিহীন থাকবে না, রোগে চিকিৎসা পাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে, প্রত্যেক ছেলে-মেয়ে স্কুলে পড়বে, সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমার একটাই কাজÑদেশের মানুষের কল্যাণ করা।’