নিজস্ব প্রতিবেদক: দশমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন কমিটিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন ওবায়দুল কাদের। তিনিও টানা তৃতীয় মেয়াদে এ দায়িত্বে থাকছেন।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এই দুজনের নাম ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। পরে বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়।
এই অধিবেশনে সারাদেশ থেকে আসা প্রায় সাত হাজার কাউন্সিলর অংশ নেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়।
আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনের অন্য দুই সদস্য ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর রহমান এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আওয়ামী লীগের আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। অতীতের নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় অধিবেশনে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রস্তাব করা হয়। তার ওপর ভিত্তি করে শীর্ষ এই দুই পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করেন কাউন্সিলররা। পরে দলের অন্য পদগুলোয় নেতৃত্ব নির্বাচনের সর্বময় ক্ষমতা দলীয় প্রধানের হাতে অর্পণ করা হয়ে থাকে। তিনি দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
কাউন্সিলে কার্যনির্বাহী সংসদের ৮১ জনের মধ্যে নাম ঘোষণা করা হলো ৪৮ জনের, যেখানে নতুন কোনো মুখ আসেনি। বাকি নাম পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। তাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীতে রয়েছেন মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, মো. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, শাজাহান খান, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম ও সিমিন হোসেন রিমি।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আগে যারা আছেন, তারাই থাকবেন বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা নাম ঘোষণা করেন। নাম ঘোষণার ক্রমানুসারে রয়েছেন হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও দীপু মনি। আর কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানই থাকছেন।
সম্পাদকমণ্ডলীতে রয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা।
সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও সুজিত রায় নন্দী। এছাড়া উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
কাউন্সিল অধিবেশনে উপদেষ্টামণ্ডলী, জাতীয় কমিটি ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদেরও নাম ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।
জাতীয় কমিটিতে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ড. মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মির্জা এমএ জলিল, আকবর আলী মর্জি, আনিসুল হক, জাহিদ মালেক স্বপন, অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, শাহজাহান কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস, চন্দ্রীজগল পাল, রমেশ চন্দ্র সেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হারুনুর রশিদ ও হাবিবুর রহমান সিরাজ থাকছেন।
সংসদীয় বোর্ডও অনুমোদন হয়েছে সম্মেলনে। এ বোর্ডের পাঁচজন এরই মধ্যে মারা গেছেন। সেগুলো পরে পূরণ করা হবে বলে জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
সংসদীয় বোর্ডের প্রধান হিসেবে নিয়ম অনুযায়ী থাকছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া রয়েছেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রাশিদুল আলম ও দীপু মনি।
স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড: সভাপতি শেখ হাসিনা; সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, মো. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রাশিদুল আলম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আব্দুর রহমান, মাহবুবউল-আলম হানিফ, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ ও আব্দুস সোবহান গোলাপ।
উপদেষ্টা পরিষদ: আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, রাজীউদ্দিন আহমেদ রাজু, মহিউদ্দীন খান আলমগীর, শফিক আহমেদ, সতীশ চন্দ্র রায়, অধ্যাপক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক রুহুল হক, কাজী আকরাম উদ্দীন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, অনুপম সেন, অধ্যাপক হামিদা বানু, অধ্যাপক হোসেন মনসুর, অধ্যাপিকা সুলতানা শফি, এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, মোহাম্মদ জমির, গোলাম মওলা নকশাবন্দি, মির্জা এমএ জলিল, প্রণব কুমার বড়–য়া, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আব্দুল হাফিজ মল্লিক, অধ্যাপক ডক্টর সাইদুর রহমান খান, গওহর রিজভী, অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, মো. রশিদুল আলম, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, কাজী সিরাজুল ইসলাম, চৌধুরী খালেকুজ্জামান, মোজাফফর হোসেন পল্টু, সালমান এফ রহমান, এনাম আহমেদ চৌধুরী, আতাউর রহমান, একেএম রহমাতুল্লাহ, শাহাবুদ্দিন টিপু, অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, শামসুল আলম, মতিউর রহমান খান, অ্যাডভোকেট জহিরুল হক, রমেশ চন্দ্র সেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, হারুনুর রশিদ ও হাবিবুর রহমান সিরাজ।