নিজস্ব প্রতিবেদক :বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংবিধান হলো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। সেটার সঙ্গে আওয়ামী লীগ বেইমানি করছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত ‘১/১১ ষড়যন্ত্র, আজকের প্রেক্ষাপট: দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০০৮ সালে যে নির্বাচনটা হয়েছে, সংবিধানে আছে সংসদ বাতিলের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। তো সেই নির্বাচন হয়েছে দুই বছর পর। তাহলে এটা কি সংবিধানসম্মত হয়েছে? এটা সংবিধানের বাইরে নয়? আমরা সেই নির্বাচনে গিয়েছিলাম, তাই জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছিল। কিন্তু এখন সে প্রতিফলনকে আবার একটি ভোট চুরির প্রকল্প বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। জাতীয় গণতান্ত্রিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে নির্বাচন হবে, সেটা আওয়ামী লীগ এককভাবে বাতিল করেছে।
তিনি বলেন, সংবিধানের ৭ ধারায় বলা হচ্ছে, সংবিধান হলো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। সেটার সঙ্গে তারা বেইমানি করছে। ভাঁওতাবাজি করছে সংবিধানের নাম ধরে। সংবিধানে যে কেয়ারটেকার সরকারের কথা ছিল, সেটা জাতীয় ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে। যে সংবিধানে জাতীয় ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি, জাতীয় ঐকমত্যের প্রতিফলন ঘটেনি, সেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে এগুলো তারা করতে পারে না। কেয়ারটেকার সরকারের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে যেটা হয়েছে, সেটা হলো দেশের গণতান্ত্রিক যে কাঠামো, সেখানে তারা আঘাত করেছে। রাজনীতিতে এই লোকগুলোর আসার কোনো অধিকার নেই। রাজনীতিতে আসতে হবে নির্বাচিত হয়ে। একটা নিরপেক্ষ সরকারের জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার, যা একটি সুন্দর সরকার দেবে; সেটাই সংবিধান। অথচ তারা ভোট চুরির অংশ হিসেবে বলছে সংবিধানের কথা। তারা মানুষের অধিকারের কথা বলছে না, তারা একটা ভোট চুরির প্রকল্পের কথা বলছে। এই প্রকল্পের মধ্যে বিচারক আছে, সরকারি কর্মকর্তারা আছে, ব্যবসায়ীরা আছে, লুটেরা আছে, রাজনীতিবিদ আছে এবং সুবিধাভোগীরা আছে।
বিএনপির এই নেতা আগামী নির্বাচন নিয়ে বলেন, নির্বাচন হলো একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অপর রাজনৈতিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। এখানে একটি দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্য একটি দল বা একাধিক দলের সঙ্গে। কিন্তু এখন তো দেশ চালাচ্ছে একটি রেজিম। অনেকেই হয়তো বলবে যে আওয়ামী লীগের কথা। কিন্তু দুঃখিত, এখানে আওয়ামী লীগের কিছু নেই। এটা একটা রেজিম, তারা জোর করে দেশ চালাচ্ছে। এই রেজিমকে দূর করতে হবে। আমাদের আন্দোলন তো এই রেজিমের বিরুদ্ধে হচ্ছে। এটিকে দূর করতে হলে জাতিকে একত্রিত হতে হবে। দেশে এখন আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আকরামুল হাসান, বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী প্রমুখ।