আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের খেদমত করে: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের খেদমত করে বলে উল্লেখপূর্বক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ওআইসি’র সদস্য হয়। ইসলামের খেদমত করার জন্য সে সময় বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রেস খেলা বন্ধ করেন, মদ-জুয়া নিষিদ্ধ করে দেন। ইসলামের চর্চা সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন করেন, মাদ্রাসা বোর্ড গঠন করেন। তিনিই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের জায়গা সুনির্দিষ্ট করে দেন। আজকের বিশ্ব ইজতেমা, এটা যেন বাংলাদেশে হয়, তারও উদ্যোগ বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করেন। বাংলাদেশে প্রতিবছর এটা হওয়ার অধিকারটা আদায় করে আনেন। ইজতেমার জায়গাটাও জাতির পিতা দিয়ে গেছেন।’ গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। খবর: বাসস।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংযুক্ত হয়ে মডেল মসজিদগুলো উদ্বোধন করেন। এ সময় দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনও অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়। এর আগে প্রথম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেছিলেন। দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে মোট ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার ইসলাম ধর্ম ও শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দাওরায় হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির মর্যাদা দিয়েছে। ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।’

মডেল মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলা ও জেলা সদরে মডেল মসজিদ করা হচ্ছে, যেখানে ইসলামিক মূল্যবোধের চর্চা হবে। ধর্ম সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান বাড়বে। ইসলামি সংস্কৃতি লালন ও বিকাশের সুযোগ হবে। ইসলাম ধর্ম আরও উন্নতভাবে পালনের সুযোগ সৃষ্টি করা, ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষকে যেন বিপথে নিতে না পারে, প্রকৃত ধর্মের

মূল্যবোধ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা সৃষ্টি হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রেখে মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প নিই। এর মূল লক্ষ্য মুসল্লিদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা, ধর্মীয় শিক্ষার সুবিধাদি সৃষ্টি, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, সরকারের উন্নয়ন বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি। ইসলামের মূল্যবোধের পরিচর্যা ও প্রসার ঘটানো।’

তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে আর কেউ যেন কোনোরকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে না পারে। সমাজের বিভিন্ন অসংগতি, যেমনÑমাদকাসক্তি, বাল্যবিয়ে, নারীর প্রতি সহিংসতা, গৃহকর্মী ও অধীনস্থদের নির্যাতন, খাদ্যে ভেজাল, দুর্নীতি প্রভৃতি দূরীকরণে ইমাম ও খতিব সাহেবদের প্রতি আমার অনুরোধ, মসজিদের বয়ান ও খুতবার শেষ সময়ে এসব বিষয় থেকে মানুষ যেন বিরত থাকে, সেজন্য সচেতন করবেন। মানুষের কাছে বিষয়গুলো তুলে ধরবেন। নৈতিক বিষয়গুলো যেন উঠে আসে, সেদিকে নজর দেবেন।’

শিক্ষক-অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং মাদক সমাজ ও পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সবাইকে বলব, প্রত্যেকের ছেলেমেয়েরা যেন এসব থেকে বিরত থাকে। ছেলেমেয়েরা কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে, এসব লক্ষ রাখবেন। ইমাম ও খতিবরাও বিশেষ অবদান রাখতে পারেন। আমরা চাই দেশে সত্যিকার ইসলামের জ্ঞানচর্চা হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি আমাদের ধর্মের সম্মানটা যেন আরও উন্নত হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সমাজ থেকে সব ধরনের অন্ধকার, কুশিক্ষা-অশিক্ষা, বিভেদ, হানাহানি ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সমাজ থেকে দূর করে গোটা সমাজকে সুন্দর রাখতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি ধর্মের মানুষ যেন তার নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে, সেই স্বাধীনতা যেন নিশ্চিত থাকে, সেটাই আমরা চাই। পরমত-সহিষ্ণুতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতা যেন বজায় থাকে। দলমত নির্বিশেষে সব মুসলমান অন্যান্য ধর্মের প্রতি সম্মান দেখিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে যাব। আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। দেশের মানুষের উন্নতি হবে।’

বৈশ্বিক মন্দার প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। আমরা বাংলাদেশটা যেন তার থেকে মুক্ত থাকি, সেজন্য সবার কাছে আবেদন থাকবে কোথাও যেন অনাবাদি জমি না থাকে। সব জায়গায় জমি আবাদ করে আমাদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সম্মানের সঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এবং সম্মানিত জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মর্যাদা পাই।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০