নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্যের গল্প মাত্র দুটিÑবিরোধী দলের ওপর জুলুম-নির্যাতন এবং গরিব মানুষের অর্থ বিদেশে পাচার। অন্য সব সেক্টরে ব্যর্থ হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের পরিবারের সঙ্গে তার সার্কিট হাউস রোডের বাসভবনে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় গত ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির প্রায় ১৮ নেতা-কর্মীকে হত্যা এবং আরও অনেককে গুম করা হয়েছে বলে দাবি করেন ড. মঈন।
সরকার কীভাবে হাবিব উন নবীর বিরুদ্ধে চার শতাধিক মামলা করতে পারে, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
মঈন অভিযোগ করেন, ‘যারা সরকারের অবৈধ কর্মকাণ্ডের চ্যালেঞ্জ করে এবং সমালোচনা করে, তাদের প্রায়ই মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয় এবং কারাদণ্ড ও অমানবিক নির্যাতন করা হয়।’
জাতীয় নির্বাচন তদারকিতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিরোধী দলের মহাসমাবেশ বানচাল করার পর সরকার বিএনপির ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত সংসদের নিন্দা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংসদ একতরফা ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। এটা দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।’
আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগ, সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, এমনকি নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে দাবি করেন মঈন।
তিনি বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন ছাড়া আইনের শাসন এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সম্ভব হবে না। এই রকম সহিংস পরিবেশে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।’
মঈন খান আরও বলেন, সরকার শুধু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই ধ্বংস করেনি, দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করেছে।
বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হওয়ায় ব্যাংক খাত তারল্য সংকটে ভুগছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মঈন খান বলেন, ‘তারা গরিব মানুষের টাকা লুটপাট করে কানাডায় বেগম পাড়া, দুবাইয়ে গুলশান-৩ এবং মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম প্রতিষ্ঠা করেছে।’
তিনি বলেন, টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ব্যাংক ম্যানেজাররা এখন গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছেন।
তিনি আরও বলেন, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তথাকথিত সবল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দেয়ার নামে সরকার নতুন খেলা শুরু করেছে।
ড. মঈন বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ তারা একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সফল হয়নি। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠাতে পারত।
