নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা দেশে ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসা মনিটরিং সেল গঠন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল শনিবার বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ সেল গঠন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সভায় উপস্থিত ছিলেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রশিদুল আলম, মুকুল বোস ও চিকিৎসক নেতারা।
দলের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বৈঠকে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসা মনিটরিং সেলের পাঁচ দফা কর্মসূচি নেওয়া হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দেশের ৬৪ জেলায় মনিটরিং সেল গঠন, জনসচেতনতা তৈরি, চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর কাজে উৎসাহিত করা, সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করা এবং সব জেলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিশ্চিত করা।
মনিটরিং সেলের আহ্বায়ক করা হয়েছে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে। এর সদস্যরা হলেন রোকেয়া সুলতানা, বদিউজ্জামান ভুঁইয়া (ডাবলু), এম ইকবাল আর্সলান, কনক কান্তি বড়ুয়া, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, এমএ আজিজ, শারফুদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন চৌধুরী, কামরুল হাসান খান, এমএ রউফ সরদার, এবিএম আবদুল্লাহ, মো. কামরুল হাসান (মিলন), উত্তম কুমার বড়ুয়া, খান আবুল কালাম আজাদ, ঝিলন মিয়া সরকার, শাহানা আখতার রহমান, এহসানুল কবির জগলুল, আলী আসগর মোড়ল, মো. জুলফিকার আলী (লেনিন) এবং সৈয়দ আতিকুল হক।
এদিকে গতকাল সকলে রাজধানীর ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সচেতনতামূলক র্যালির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, যতদিন দেশ ডেঙ্গুমুক্ত ও এডিস মশা নির্মূল না হবে ততদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ‘পরিষ্কার রাখি চারপাশের পরিবেশ পরিছন্ন-ডেঙ্গু মুক্ত বাংলাদেশ’ স্লোগানে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এ র্যালির আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন সময়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। দেশের মানুষকে ডেঙ্গু আতঙ্ক থেকে রক্ষা করতে হবে। একটি মহল আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, যাতে ঈদের সময় কেউ বাড়িঘরে না যায়। আপনারা সতর্ক থাকবেন। এটাই আমাদের অনুরোধ সতর্ক থেকে ঈদ উদ্যাপন করবেন। ‘বাড়িঘরে সবাই যাবেন কিন্তু সতর্ক থাকবেন।’ তিনি বলেন, ডেঙ্গুমুক্ত বাংলাদেশ যতদিন পর্যন্ত গড়তে না পারব ততদিন আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে, ততদিন পর্যন্ত লড়াই চলবে। এটাই আমাদের আজকের অঙ্গীকার।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপমুক্ত ও এডিস মশা নির্মূল আমরা লড়াই হিসেবে নিয়েছি। দল হিসেবে বিএনপিরও দায়িত্ব আছে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করার। কিন্তু তারা কোথাও নেই। তারা কখনও বলছে সরকার ব্যর্থ, কখনও বলছে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের ব্যর্থতা থেকে উদ্ধারের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা দরকার। বিএনপি এটাকে নিয়ে রাজনীতি করছে। তারা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেই, তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করছে না। তারা সংকটে আছে, তাদের উদ্ধারের জন্য জরুরি অবস্থা দরকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করছি। সারা দেশের ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষ যাতে চিকিৎসা পায়, যাতে যথাযথভাবে ডেঙ্গু শনাক্ত হয় সে জন্য এ সেল কাজ করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ ও এডিস মশা আশঙ্কাজনকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। আমরা এ পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রেখে যে কোনো মূল্যে দেশকে ডেঙ্গুমুক্ত করবো। সবাই যদি আমরা সচেতন হই তাহলে আমরা ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাঁচতে পারব।
র্যালিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে ওই এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হয় এবং নেতাকর্মীরা পরিচ্ছন্নতা কাজে অংশ নেন।