আকাশ মো. জসিমযে গ্রাম পাখিদেরও

দিগন্তজুড়ে সবুজ আর সাদার মিশ্রণ। সবুজের বুকে পাখা মেলে নীল আকাশে প্রকৃতিকে সাজিয়েছে সাদা বক পাখি।
হাজারো রঙের বক এক হয়ে আপন করে নিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার গাঙ্গর গ্রামটি। যুগ যুগ ধরে গ্রামটিতে বক এসে বসবাসের কারণে পরিচিতি পেয়েছে ‘বকের গ্রাম’ হিসেবে।
গ্রামটির চারপাশজুড়ে বাঁশঝাড় আর বড় গাছ। ঝাঁকে ঝাঁকে বক এসে আশ্রয় নিয়েছে বাঁশঝাড়গুলোয়। ওদের ডাকে পুরো গ্রাম সকাল-সন্ধ্যা থাকে মুখর।
সকালে ঝাঁক বেঁধে আহারের উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়ে, গোধূলিবেলায় আবার আপন নীড়ে ফেরে। এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ এলাকাবাসী। গ্রামটিতে এমন দৃশ্য দেখতে সকাল-বিকাল ভিড় জমান আশেপাশের এলাকার বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থী।
সন্ধ্যায় পুরো এলাকা আন্দোলিত হয় বকের কলকাকলিতে। আবার সকালে ঘুম ভাঙে সাদা বকের কোলাহলে।
এ গ্রামে বসবাসরত দীনেশ চন্দ্র রায় বলেন, বকগুলোকে আমরা কেউ আঘাত করি না। কাউকে তাড়াতেও দিই না। পাখিশিকারীমুক্ত গ্রামটিতে কেউ পাখি ধরতে আসে না। এখানে পাখি ধরা ও মারা সম্পূর্ণ নিষেধ। ৭০ বছর বয়সী প্রবীণ রমেশ বর্মণ বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি এ বকগুলো বর্ষা মৌসুমে আসে; আবার চারদিকের পানি শুকিয়ে গেলে চলে যায়। বর্তমানে সারা বছরই থাকে।
অনেক সময় প্রকৃতির ঝড়ে পাখির বাসাগুলো ভেঙে যায়। বকছানা মাটিতে পড়ে যায়। খড়কুটো দিয়ে আবার নতুনভাবে বাঁশঝাড়ে উঠিয়ে দেওয়া হয়। ওদের প্রতি এলাকার সবারই মায়া আছে।
গৃহিণী জোহরা বেগম জানান, শুধু বাঁশঝাড়ই নয়, অনেক সময় ঘরেও চলে আসে পাখি। ঝড়-তুফান হলে অনেক পাখি বসতঘরে ঢোকে। মানুষ ও পাখি মিলেমিশে একসঙ্গে থাকে তখন। চৌকির ওপর কিংবা নিচের অংশ পাখিরা দখল করে নেয়।
পার্শ্ববর্তী এলাকা আসা কয়েক দর্শনার্থী বলেন, বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার বক আমরা কখনও একসঙ্গে দেখিনি। এখানে এসে মন জুড়িয়ে গেল।
শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, এ বকগুলো সাধারণত জলাশয়ের কাছাকাছি পছন্দের এলাকায় বাঁশঝাড় কিংবা বড় গাছের ডালে বাস করতে পছন্দ করে। মানুষ না ঘাঁটালে এরা টানা শতবছর ধরে একই স্থানে বসতি গেড়ে থাকতে পারে।

মো. শামসুল আলম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০