নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে আমদানি দায় পরিশোধের পর রিজার্ভ আরও কমে গেছে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ কমে ২০ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন বা দুই হাজার ৪৬ কোটি ডলারে নেমেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে তা ২৬ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে-জুন মাসের আকুর বিল বাবদ ১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন বা ১৪২ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। আকু হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যকার একটি আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে এশিয়ার ৯টি দেশের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানি হয়, তা প্রতি দুই মাস পরপর নিষ্পত্তি হয়। তবে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। আকুর সদস্য দেশগুলো হচ্ছেÑবাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সম্প্রতি এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা।
জানা যায়, গত ৩০ জুন আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। আকু বিল পরিশোধের পর তা কমে এখন ২০ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ ১ দশমিক ৩১ বিলিয়র ডলার কমেছে। অন্যদিকে ৩০ জুন শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মোট রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। এখন তা ২৬ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ডলার-সংকটের মধ্যে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ চায় বাংলাদেশ। ছয় মাস পর সংস্থাটি গত বছরের ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে। এর তিন দিনের মাথায় ২ ফেব্রুয়ারি ঋণের প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার এবং গত ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আর গত ২৪ জুন ঋণের তৃতীয় কিস্তি অনুমোদন করে আইএমএফ। আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ মোট ঋণ নিচ্ছে ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করা হবে। ঋণ অনুমোদনের সময় আর্থিক খাতে নানা সংস্কারের পাশাপাশি চাহিদামতো নিট রিজার্ভ রাখাসহ বেশ কিছু শর্তও জুড়ে দেয় আইএমএফ। চতুর্থ কিস্তির জন্য বাংলাদেশকে এ বছরের জুন শেষে প্রকৃত রিজার্ভ দুই হাজার ১০ কোটি ডলার রাখতে বলা হয়েছিল। পরে বাংলাদেশের অনুরোধে তা কমিয়ে এক হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার (১৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন) করা হয়।
জানা যায়, আইএমএফর অর্থ দিয়েই তাদের দেয়া ঋণের শর্ত পূরণ করছে বাংলাদেশ। বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত রিজার্ভ বা মজুত রাখার বিষয়ে সংস্থাটি যে লক্ষ্য দিয়েছিল, তা গত চার ত্রৈমাসিকে পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য কয়েক দফা শর্ত শিথিল করা হয়েছে। অবশ্য পঞ্চম ত্রৈমাসিকে, অর্থাৎ গত জুনে সে লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে।