আক্ষেপ ঘুচানোর অপেক্ষায় মুশফিক

ক্রীড়া প্রতিবেদক: তিনি দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম একজন। শুধু অভিজ্ঞই নন, টেস্টে অধিনায়কের দায়িত্বটাও পালন করছেন বেশ দৃঢ়তার সঙ্গেই। ক্যারিয়ারের এক যুগ পার হয়েছে আরও আগে। এরই মধ্যে খেলেছেন ৫৪টি টেস্ট। টেস্ট স্ট্যাটাসপ্রাপ্ত সব দলের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে মুশফিকুর রহিমের। শুধু খেলা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

প্রায় ১১ বছর পর বাংলাদেশ টেস্ট খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দু’দলের মধ্যে টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল ২০০৬ সালে। সে সিরিজে ছিলেন না মুশফিকসহ দলের বাকি অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রাও। সে জায়গা থেকে স্বাভাবিকভাবেই টেস্ট অধিনায়কের মধ্যে এক ধরনের আক্ষেপ কাজ করছে। সে আক্ষেপ রূপ নিয়েছে রোমাঞ্চে। মুশফিকুর রহিম তাই রোমাঞ্চিত।

গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সেই রোমাঞ্চ উঠে এলো মুশফিকের কণ্ঠে। চট্টগ্রাম পর্বের তৃতীয় দিনের অনুশীলন শেষে মুশফিক বলেন, ‘আমি অবশ্যই রোমাঞ্চিত যে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলব। সব দলের সঙ্গেই খেলা হয়েছে, শুধু অস্ট্রেলিয়াই বাকি ছিল। এবারের সুযোগটা অনেক বড়। শুধু আমার জন্যই নয়, আমাদের দলের জন্যও। এখন যারা খেলছেন, তাদের মধ্যে কেবল মাশরাফি ভাই খেলেছেন অনেক দিন আগে। সবাই জানেন চ্যালেঞ্জটা অনেক কঠিন। কিন্তু আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে যে, আমরা অস্ট্রেলিয়াকে কঠিন চ্যালেঞ্জ দিতে পারবো, যেটা ইংল্যান্ডকে দিতে পেরেছি।’

এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে টেস্ট খেলা হচ্ছিল না স্টিভেন স্মিথদের বিপক্ষে। তার ওপর বেতন-ভাতা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে সংকট চলছিল। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের এমন অনিশ্চয়তায় গত কিছুদিন ধরে উদ্বিগ্ন ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও। এ অবস্থায় আক্ষেপের সৃষ্টি হয় মুশফিকসহ দলের অন্যদের মধ্যে। তাই অজিদের বাংলাদেশে আসাটা নিশ্চিত হওয়ায় রোমাঞ্চিত মুশফিক। স্বপ্ন দেখছেন জয় ছিনিয়ে আনার, ‘সিরিজটা ভালোভাবে শেষ করতে পারলে এতদিন না খেলার আক্ষেপটা থাকবে না। মনেপ্রাণে চেষ্টা করতে চাই এবার। কারণ জানি না আবার কবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলার সুযোগ আসবে। ১২ বছরে অনেক কিছুই শিখেছি টেস্ট ক্রিকেটে। চেষ্টা করবো সবকিছু কাজে লাগিয়ে ফল আমাদের পক্ষে নিয়ে আসতে।’

সবারই লক্ষ্য থাকে নিজের পারফরম্যান্সটাকে ঠিক রাখার। তবে অধিনায়ক বলে নিজের চাওয়ার পাশাপাশি দলীয় লক্ষ্যটাকে দেখছেন বড় করে। ‘তারা ক্রিকেটে শীর্ষ দলগুলোর একটি। শুধু দেশের মাটিতেই নয়, উপমহাদেশেও ভালো খেলে। আমি মনে করি, এরকম পেশাদার দলের বিপক্ষে সবারই লক্ষ্য থাকে ভালো করার। আমারও তা-ই। তবে জিম্বাবুয়ে হোক বা অস্ট্রেলিয়া, আমি প্রতিটি ম্যাচই একভাবে দেখি।’

অধিনায়ক বলে কথা! দলের চাওয়ার পাশাপাশি দেশের দর্শকদের অনেক দিনের প্রত্যাশাও মেটাতে চান মুশফিক। বললেন, ‘আগেই বলেছি, এটা অনেক বড় সুযোগ নিজেদের মাঠে অনেক দিন পর খেলা হবে। শুধু আমি নই, বাংলাদেশের দর্শকরা অনেক রোমাঞ্চিত; কারণ অনেক দিন পর দেশের মাটিতে খেলা হবে। তারা অধীর অপেক্ষায় আছে। আমরা আমাদের সেরাটা খেলতে পারলে আশা করি ফল ভালো হবে।’

এর আগে অজিদের দুটি টেস্টেই হারানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কোচের পর এবার দলপতি হিসেবে নিজের ও পুরো দলের লক্ষ্যের কথাটাও জানালেন মুশফিকুর রহিম। কোচের চাওয়া জয়, অধিনায়কের কণ্ঠেও একই বাণী। দলের বাকিদের শরীরী ভাষাও বেশ চোখে পড়ার মতো। এবার দেখার পালাÑএ আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন মাঠে কতটা ফলে!

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৮ আগস্ট ঢাকা আসবে অজি ক্রিকেট দল। সফরে স্বাগতিকদের সঙ্গে দুটি টেস্ট খেলবে তারা।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০