Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 8:10 pm

আগস্টে নিবন্ধিত গ্রাহক বেড়েছে পাঁচ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) আওতায় গত আগস্টে নিবন্ধিত গ্রাহক বেড়েছে প্রায় পাঁচ লাখ। এছাড়া এজেন্ট বেড়েছে আট হাজার ৪৬৭ জন। তবে ওই মাসে সক্রিয় হিসাবসংখ্যা, গড় লেনদেনসহ অনেক সূচকই ঋণাত্মক ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ করা প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংসেবার আওতায় চার লাখ ৯৪ হাজার নিবন্ধিত গ্রাহক বেড়ে মোট গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়ায় সাত কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার। ওই মাসে এজেন্টসংখ্যা বেড়ে হয় ৯ লাখ ৫১ হাজার।
তবে সক্রিয় হিসাব ছিল তিন কোটি ৩১ লাখ। গত জুলাইয়ে সক্রিয় হিসাব ছিল তিন কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার। আগস্টে সক্রিয় হিসাব কমেছে এক দশমিক ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত কোনো হিসাব সক্রিয় বলে বিবেচিত হতে হলে তিন মাসের মধ্যে অন্তত একবার লেনদেন করতে হবে। না হলে ওই হিসাব নিষ্ক্রিয় বলে গণ্য করা হবে।
প্রাপ্ত তথ্যে আরও দেখা যায়, আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংসেবার আওতায় সংখ্যার দিক দিয়ে মোট লেনদেন কমেছে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ এবং পরিমাণের দিক দিয়ে কমেছে পাঁচ দশমিক ২০ শতাংশ। আগস্টে এ সেবায় দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্টরা জানান, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে জুলাই মাসে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন বেড়েছিল। ওই মাসে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ২০৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়। ওই মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় মোট ৩৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়। যা এর আগের মাস জুনের তুলনায় ১৮ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত ১৬ ব্যাংক বর্তমানে এমএফএস সেবা দিচ্ছে। অর্থ আদান-প্রদান ছাড়াও অনেক নতুন নতুন সেবা যুক্ত হচ্ছে এ খাতে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মাশুল পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো, অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত মাসে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোয় টাকা জমা পড়েছে (ক্যাশ ইন) ১২ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে সাত শতাংশ কম। অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে (ক্যাশ আউট) ১২ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ের তুলনায় পাঁচ শতাংশ কম। আগস্টে এমএফএসে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে আট হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ চার দশমিক ৩০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯০৩ কোটি টাকায়। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৮৭ কোটি টাকা। অবশ্য আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় কেনাকাটার বিল পরিশোধ বাড়তে দেখা গেছে। ওই মাসে কেনাকাটার বিল পরিশোধ হয়েছে ৪০৭ কোটি টাকা। গত ১২ আগস্ট দেশে ঈদুল আজহা পালিত হয়। এর অব্যবহিত আগের মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৩৭১ কোটি টাকা।
গত জুলাইয়ে এ সেবার আওতায় সরকারি বিভিন্ন ভাতা বাবদ ৪১৬ কোটি টাকা পরিশোধ হয়েছে। আগস্টে তা কমে ৯ কোটি ৪২ লাখ টাকায় নেমে আসে। এছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৬০৪ কোটি টাকা।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালুর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে এমএফএসের যাত্রা শুরু। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালু করে বিকাশ।