Print Date & Time : 30 June 2025 Monday 3:36 am

আগামী অর্থবছর ৫০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি থাকবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, অর্থনীতির আকার অনুসারে আগামী বাজেট মোটেই বড় নয়। আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে আমরা সম্পদ আহরণ করতে পারছি না। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) বিপরীতে রাজস্ব আয়ের হার একেবারে কম। এরপর এ বছর বাজেটের আকার আরও বাড়ছে। নির্বাচনী বছরে নতুন খাত থেকে খুব বেশি কর আসবে বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, ২০১১ সাল থেকে বাজেট বাস্তবায়নে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ওই বছর থেকে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ক্রমান্বয়ে পার্থক্য বাড়ছে। আগামী বছরেও রাজস্ব আয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি থাকবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি সরকারের নেওয়া বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি (বিইউ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘আগামীর বাজেট: চ্যালেঞ্জ এবং প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বিইউর অর্থনীতি বিভাগ সেমিনারের আয়োজন করে। বিভাগের সভাপতি ড. মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ ড. এমএম আকাশ। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কামরুল হাসান। এছাড়া নির্ধারিত বিষয়ের উপর আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী।
মূল প্রবন্ধে অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ বলেন, এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতে সাধারণত প্রবৃদ্ধি ভালো। তারপরও মূল্যস্ফীতি হতে পারে। বাংলাদেশ আগামী ১৩ বছরে ৯২৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজস্ব আদায়ের হার সুখকর নয়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে রাজস্ব আদায় সবচেয়ে কম হয়। আমাদের দেশে অসংখ্য মানুষ আছে, যারা কর দেওয়ার যোগ্য, কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের চিহ্নিত করাই সম্ভব হয়নি। অনেকে এখনও করের আওতার বাইরে আছে। তাদের যুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি দুর্নীতির হারও কমাতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে দিন দিন অসমতা বেড়েই চলছে। আর বৈষম্যও দিন দিন বাড়ছে। এটি কমাতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশে বড় ধরনের সমস্যা বলেও তিনি প্রবন্ধে উল্লেখ করেন।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা এসডিজি বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, বৈষম্য কমিয়ে আনা, বাজেট বাস্তবায়ন বাড়ানো এবং জলবায় পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সতর্ক হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। সেইসঙ্গে তারা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসার পর যেসব চ্যালেঞ্জ দেখা দেবে সেগুলোর মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতির পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও কর্মকর্তা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলেন।