Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:10 am

আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে আগামী পাঁচ বছরে দেশের অভ্যন্তর ও বাইরে মোট এক কোটি পাঁচ লাখ (১০ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন) কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রাক্কলন অনুযায়ী, সাধারণ দারিদ্র্যের হার ২০২১ সালে ১৭ দশমিক দুই শতাংশ ও ২০২৫ সালে ১২ শতাংশে নেমে আসবে। অতিদারিদ্র্যের হার আট দশমিক ৩৭ শতাংশ হতে পাঁচ দশমিক ২৮ শতাংশে নেমে আসবে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) দুদিনব্যাপী সম্মেলন শেষে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো।

গত বুধবার দুদিনব্যাপী বিডিএফ সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জš§শতবার্ষিকীকে উৎসর্গ করা হয়েছে এবারের বিডিএফ সম্মেলন। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন সামনে রেখে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এবার বিডিএফের প্রতিপাদ্য ‘ইফেক্টিভ পার্টনারশিপ ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’।

এবারের সম্মেলনে সব মিলিয়ে ৩৫ থেকে ৪০টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেন। উদ্বোধনী অধিবেশনসহ এবারের সম্মেলনে ৯টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অধিবেশনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘ইফেক্টিভ পার্টনারশিপ ফর ইমপ্লিমেন্টিং দি এইটথ ফাইভ ইয়ার প্ল্যান এইমিং টুওয়ার্ডস অ্যাচিভিং এসডিজিস।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম এবার এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের বিভিন্ন মাপকাঠিতে এগিয়ে চলেছে। এখন সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। একই সঙ্গে সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছে সরকার।

তিনি বলেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের অর্থায়ন করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। বিনিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ জিডিপি ৩২ দশমিক আট শতাংশ। পাঁচ বছরে এটি বেড়ে ৩৭ দশমিক দুই শতাংশ হবে। এ সময় রাষ্ট্রীয় খাতের বিনিয়োগ আট দশমিক দুই থেকে বেড়ে ৯ শতাংশ এবং ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ২৪ দশমিক পাঁচ থেকে ২৮ দশমিক দুই শতাংশ হবে।

প্রবৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, অষ্টম পরিকল্পনার প্রাক্কলন অনুযায়ী জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২০ সালের আট দশমিক ২৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে আট দশমিক ৫১ শতাংশ হবে। আগামী পাঁচ বছরে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। ব্যবসাবান্ধব, ম্যানুফ্যাকচারিং-বান্ধব ও রপ্তানিবান্ধব ট্যাক্স-রেজিম সৃষ্টি করা হবে। সরকারি বিনিয়োগে দেশীয় অর্থায়ন নিশ্চিতের জন্য মোট রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

এদিকে বিডিএফ সম্মেলনে যোগ দিতে এসে গত বুধবার বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট শিজিন সেন অর্থমন্ত্রীর শেরেবাংলা নগরের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তারা পারস্পরিক বিভিন্ন বিষয় ও সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা করেন।