নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ খাতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। আমরা ভেড়ামারা থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছি, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাব, ভারতের আদানি থেকেও বিদ্যুৎ আসবে। ফলে আগামী বছর থেকে বিদ্যুৎ সংকট অনেকটাই কেটে যাবে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়লে তার ব্যবহারও বাড়বে। ফলে ডিস্ট্রিবিউশন লাইনে ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে উত্তরাঞ্চলে প্রচুর খালি জায়গা রয়েছে। সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) যথাযথ ব্যবহার করতে পারে। গতকাল রাজধানীর এক হোটেলে নেসকো আয়োজিত ‘নেসকো টুওয়ার্ডস ২০৪১, চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় তাদের ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করছে। কোন জমি কীভাবে ব্যবহƒত হবে তার একটা মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। নেসকো তার এলাকায় কীভাবে বিদ্যুৎ ডিস্ট্রিবিউট করতে পারে সে বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। ওখানে দুটো ইকোনমিক জোন এবং একটা বিসিক এরিয়া আছে। ফলে যথাযথ পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ডিস্ট্রিবিউট করতে হবে।
তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলে ২৭ হাজার সেচ পাম্প আছে। সেগুলোকে সোলার পাওয়ারের আওতায় আনার পরিকল্পনা করতে হবে। ২০৪১-এ বাংলাদেশের লক্ষ্য হলো জ্বালানি খাতে ৪০ শতাংশ ক্লিন এনার্জি বাস্তবায়ন করা। নেসকোর এ বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত। নেসকোর আওতাধীন এলাকাগুলোর স্কুলের ছাদের সোলার প্যানেল বসানোর প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।
পেমেন্ট সিস্টেম বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে নেসকো এরিয়ার সব বিল সিস্টেম স্মার্ট প্রিপেইড মিটারের আওতায় চলে আসবে। এতে ভোগান্তি যেমন কমে যাবে, উত্তোলিত অর্থেরও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুৎ খাতে আগামীতে এগিয়ে যাওয়ার পথ হলো টেকনোলজি। যার বিকল্প নেই। যে যত দেরিতে যাবে সে তত পিছিয়ে যাবে। পিজিসিবি, বিপিডিবি টেকনোলজিতে ঢুকতে পারেনি। এক্ষেত্রে নেসকো এগিয়ে গেছে। ফলে ২০১৬ জš§ নেয়া প্রতিষ্ঠানটি খুব অল্প সময়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেনÑবিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবীবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, নেসকো পিএলসির চেয়ারম্যান মহসিন চৌধুরী প্রমুখ।
নেসকো চেয়ারম্যান মো. মোহসীন চৌধুরী বলেন, নেসকো গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকায় তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিছুটা পিছিয়ে থাকা এই এলাকার জনগণের সরলতা সর্বত্র সমাদৃত। এই এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে একটু কম। বিদ্যুতের চাহিদাও কিছুটা কম। নেসকো এ এলাকায় একটি ক্যাটালিস্টের ভূমিকায় রয়েছে। নেসকোর সফলতার ওপর নির্ভর করছে এ এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি-প্রকৃতি। ফলে এ এলাকা হয়ে উঠবে বাংলাদেশের ক্রিটিক্যাল অর্থনৈতিক জোন।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, দুয়েক বছরের মধ্যে শতভাগ গ্রাহক প্রিপেইড মিটারের আওতায় আসবে। ২০২৫ সালের মধ্যে নেসকো একটি স্মার্ট ডিস্ট্রিবিউশন গড়ে তুলতে চায়। আমি আশা করছি, তারা সবার আগে সেটি করতে সক্ষম হবো।
পাওয়ার সেলের ডিজি মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, নেসকো সব দিক থেকেই অনেক এগিয়ে গেছে। তাদের মিটার সিস্টেম, টেকনিক্যালি অনেক এগিয়ে আছে। কিন্তু তাদের সিস্টেম লস এখনও কিছুটা বেশি। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।