Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 6:59 pm

আগামী মাসেই এলপিজি নীতিমালা হতে পারে: নসরুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে এলপিজি ব্যবহার, বাজারজাতকরণে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী মাসেই এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে মিট দ্য প্রেসে তিনি এ কথা বলেন। ডিআরইউ’র সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন  নোমানী।

তিনি বলেন, গ্যাসের সংকট মোকাবিলায় শিল্পে এলএনজি ও আবাসিকে এলপিজি ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এলপিজি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, আগামী মাসেই প্রজ্ঞাপন হতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, সরকারের কাছ থেকে সরাসরি অর্থ না নিয়ে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগে নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হবে। পরিবেশবান্ধব উন্নয়নই টেকসই উন্নয়ন, আর এ কারণে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি আমাদের সব কার্যক্রমেই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রেও এর ব্যত্যয় হয়নি। প্রযুক্তিগত কারণেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশের ক্ষতি করবে না।

তিনি বলেন, মোট বিদ্যুতের ৬৩ শতাংশ গ্যাস থেকে উৎপন্ন হয়। ফলে কার্বন নিঃসরণ কম হয়। তাই কার্বন ট্রেডিংয়ের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ সময় তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানি, এনার্জি অডিট, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা, ইনোভেটিভ ফাইন্যানসিং, বিদ্যুৎ উৎপাদন-সঞ্চালন-বিতরণ ব্যবস্থা, বিকল্প জ্বালানি ও জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে ১০ হাজার  মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রচেষ্টা চলছে। নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি হবে। নেপাল থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আনার বিষয়ে ভারত সরকারও সম্মতি দিয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আমরা ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে চাই। এ লক্ষ্যে প্রথমে নেপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। একই পদ্ধতিতে ভুটানেও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ করার জন্য প্রাথমিকভাবে এক বিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে। সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে এক হাজার  কোটি ও ইআরএল ইউনিট-২ বাস্তবায়িত হলে বছরে দুই হাজার ৪০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অকটেন ও  পেট্রলের দাম কমানোর চিন্তা করা হয়েছিল। সরকার প্রাইভেট কারে সিএনজিকে নিরুৎসাহিত করতে চায়। সরকার চায় গণপরিবহনে সিএনজির ব্যবহার থাকুক। এসব কারণে পেট্রল ও অকটনের দাম কমানোর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে এখন তেলের দাম বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশে তেলের দাম কমানো হচ্ছে না।

রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্র-সম্পর্কিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলছে। অনেকেই অনেক কথা বলছেন। ভালো কাজের আলোচনা সমালোচনা হয়। যমুনা সেতু করার সময় কিছু পরিবেশবিদ বলেছিল সেতুর পাইলিংয়ের ফলে ইলিশ মাছ ধ্বংস হয়ে যাবে, মাছের গতিপথ নষ্ট হয়ে যাবে। অথচ যমুনা সেতু হয়েছে কিন্তু ইলিশের কোনো ক্ষতি হয়নি। তেমনি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে। সেখানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, তাতে সুন্দরবনের পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।