আগামী সপ্তাহে আসছে আরও ৫৪ লাখ টিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৫ আগস্টের মধ্যে কভিডের আরও ৫৪ লাখ টিকা দেশে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, এই ৫৪ লাখের মধ্যে ৩৪ লাখ ডোজ বাংলাদেশ পাবে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে। চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের টিকার আরও ১০ লাখ ডোজ পৌঁছাবে। আরও ১০ লাখ ডোজ চীন উপহার হিসেবে দেবে।

মন্ত্রী বলেন, মোট ৫৪ লাখ টিকা আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে আমরা পেয়ে যাব। এতে সুবিধা হবে টিকার কার্যক্রম যে বেগে চলছে, সেটা বজায় রাখতে পারব। চীন এ মাসে আরও ৫০ লাখ টিকা দেবে।

নিবন্ধন করলেও অনেকে এখনও টিকা নেয়ার জন্য এসএমএস পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা যখন হাতে থাকে না তখন মেসেজ যায় না। টিকাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে মেসেজ দেয়া হয়। সামনে টিকা বেশি করে আসবে, তখন আরও বেশি করে মেসেজ যাবে। হাতে কত টিকা আছে, এ মুহূর্তে বলতে পারছি না, তবে বেশ কিছু টিকা আছে।’

সরকারের কেনা, উপহার পাওয়া ও কোভ্যাক্সের মাধ্যমে পাওয়া টিকা মিলিয়ে এ পর্যন্ত দেশে এসেছে দুই কোটি ৫৬ লাখের বেশি টিকা। গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণ টিকাদান শুরু হলেও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা টিকা সময়মতো না পাওয়ায় তার গতি ব্যাহত হয়।

এখন চীন থেকে টিকা কিনছে সরকার। পাশাপাশি টিকা সরবরাহের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকেও টিকা আসতে শুরু করেছে। নতুন করে টিকা আসতে থাকায় বড় পরিসরে ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করে বিরাট জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে শনিবার থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ছয় দিনের গণ টিকাদান কর্মসূচি চলছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নে ৬০০ করে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমরা দেখলাম যে তার থেকে অনেক বেশি লোক এসে হাজির হয়েছেন। যেসব সেন্টারে বেশি টিকা ছিল তারা বেশি দিয়েও দিয়েছে। ঝড়বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় পরের দিন টিকা দেয়া হয়েছে, দুর্গম এলাকায় পরে দেয়া হয়েছে। সব জায়গায় সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামে টিকা প্রার্থীর সংখ্যা আগে কম ছিল, বয়স্করা কম পেয়েছিল, টিকা নিতে কিছু অনীহাও ছিল। সেই অনীহা কেটে গেছে। টিকার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে টিকা দেয়া হচ্ছে, সেটা চলমান আছে এবং চলমান থাকবে।’

গ্রামে বয়স্কদের মধ্যে কভিডে মৃত্যুহার বেশি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য টিকা গ্রামে নেয়া হয়েছে। এই কার্যক্রম মাঝে মাঝেই ঘোষণা দেব। টিকা হাতে এলে যে পরিমাণ লাগে ক্যাম্পেইন করতে, সেটা পেলেই এভাবে টিকা দেব।’

জাহিদ মালেক জানান, চীনের সিনোফোর্মের কাছ থেকে আরও ছয় কোটি ডোজ টিকা কেনার অনুমোদন সরকার দিয়েছে। চীনও তাতে সম্মতি দিয়েছে। এখন বিষয়টি চুক্তির পর্যায়ে আছে। এর আগে সিনোফোর্ম থেকে দেড় কোটি ডোজ কভিড টিকা কেনার চুক্তি হয়েছিল, যা ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চীন সেপ্টেম্বরে ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন, অক্টোবরে ২৩ মিলিয়ন আর নভেম্বরে ২৩ মিলিয়ন টিকা দেবে। পাশাপাশি কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন আসবে। ছয় মিলিয়ন ফাইজারের টিকাও পাওয়ার কথা। আমরা আশা রাখি ভারতের কাছে যে টিকা রয়ে গেছে, তাও পাব। কিন্তু এখনও কোনো রকমের কনফার্ম তারিখ তারা দেয়নি। এখন টিকার খুব প্রয়োজন। টিকা নিয়ে মানুষ সুরক্ষিত হয়। তবে সংক্রমণ থেকে পুরোটা সুরক্ষিত হবে, তা নয়। এজন্য টিকা নিলেও মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।’

আগামী বছরের শুরুতে দেশে সব মিলিয়ে প্রায় ২১ কোটি ডোজ টিকা আসার সম্ভাবনার কথা এর আগে বলেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সে প্রসঙ্গ ধরে গতকাল তিনি বলেন, ‘সেই ২১ কোটির মধ্যে তিন কোটি ছিল চীনের। এই তিন কোটি বাদে আরও চার কোটি যোগ হলো। কারণ যারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা তো টিকা নাও দিতে পারে। এজন্য আমরা টিকার সংখ্যার বাড়াচ্ছি। যেখান থেকে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখছি, সেখানে কথা বলছি। জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা আগামী বছরের মাঝামাঝি আসবে। তার আগে আমরা টিকা পেলে সেটাই গ্রহণ করব। চীন থেকে আগে টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছি। আমরা চাই মানুষকে তাড়াতাড়ি টিকা দিতে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০