নিজস্ব প্রতিবেদক: আগের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমানের পার্থক্যের কথা উল্লেখ করে ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, আগে পুলিশ গুলি করত হাঁটুর নিচে, আর এখন করে বুকের ওপরে। শুধু তাই নয়, সীমান্তের ওপার থেকে অদৃশ্য একটা শক্তি সব আন্দোলনেই মৌলিক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘ভোট বাঁচাও দেশ বাঁচাও, গণতন্ত্র রক্ষা কর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, চলমান আন্দোলনে বিএনপিসহ যেসব সমমনা দল রাজপথে আছে তাদের মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি, ভুল-ভ্রান্তি থাকতেই পারে। কিন্তু আমি মনে করি মূল সমস্যাটা সেখানে নয়। একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, আজ আমরা যে আন্দোলন করছি তা কেবল স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তা মনে করা ঠিক নয়। আমরা আন্দোলন করছি একটি বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে। যারা আমাদের সীমান্তরেখার ওপারে থেকে দেশের সবকিছু কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হচ্ছে।
১২ দলীয় জোটের প্রধান বলেন, মহান ভাষা আন্দোলন, ১১ দফা আন্দোলন অথবা আইয়ুববিরোধী আন্দোলনসহ পরবর্তী স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে আজকের বিরাজমান পরিস্থিতির একটা মৌলিক পার্থক্য আপনাদের উপলব্ধি করতে হবে। আগে পুলিশ গুলি করতো হাঁটুর নিচে, আর এখন গুলি করে বুকের ওপরে। শুধু তাই নয়, সীমান্তের ওপার থেকে একটা অদৃশ্য শক্তি গণ-আন্দোলন বলেন বা সরকারবিরোধী আন্দোলনই বলেন, তাতে একটা মৌলিক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এই পার্থক্যটি যদি রাজনৈতিক বক্তা হিসেবে আমাদের বক্তৃতায় এবং উপলব্ধির ক্ষেত্রে যদি অনুল্লেখিত থেকে যায় তাহলে আন্দোলন সাফল্যমণ্ডিত হতে পারবে না।
চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন কেন ব্যর্থ হচ্ছে এ বিষয়ে ১২ দলীয় জোটের এই প্রধান বলেন, বর্তমান আন্দোলন বিএনপির কারণে সফল হচ্ছে না, এ কথা মানতে আমি রাজি নই। একটা মৌলিক পরিবর্তন বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা লক্ষ করছি, তা হচ্ছে- আজকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে যারা, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথোপযুক্ত কথা বলতে সম্ভবত ব্যর্থ হচ্ছি। এই বিষয়টাকে আজ আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে সামনে নিয়ে আসতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মনজু, গণঅধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসান, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।