Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:15 pm

আজকের দিনে

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে শওকত আলী একটি স্মরণীয় নাম। ঢাকার ১৫০নং মোগলটুলিতে ১৯১৮ সালের ২০ এপ্রিল শওকত আলী জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ১৯৪৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্নিকটে রশিদ বিল্ডিংয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ওই বৈঠকে শওকত আলী উপস্থিত ছিলেন এবং সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ সংগ্রাম পরিষদ দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করে। শওকত আলী হরতাল কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি পর্বের প্রতিটি স্তরে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সবচেয়ে বেশি পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। ১১ মার্চের হরতালে শওকত আলী পুলিশি নির্যাতনে আহত হওয়ার ফলে একপর্যায়ে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রিকশাযোগে হাসপাতালে নিয়ে যান। ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা চুক্তি স্বাক্ষরের পর চুক্তির শর্তানুসারে ভাষা আন্দোলনের দায়ে বন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পেয়ে শওকত আলী ও শেখ মুজিবুর রহমান রাতে ১৫০ নম্বর মোগলটুলিতে ফিরে আসেন এবং পরদিন অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারি আবারও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্রসভা এবং ছাত্রসভার পর অ্যাসেমব্লি ভবন অভিমুখে মিছিল হয়, ওই জনসভা ও মিছিলে শওকত আলী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। পিকেটিং করার একপর্যায়ে পুলিশের লাঠিচার্জে তিনি আহত হয়ে মাঠিতে লুটিয়ে পড়েন এবং অজ্ঞান হয় যান। পরে পলাশী ব্যারাকের কর্মচারী ও সংগ্রামী জনতা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের ‘অপরাধে’ শওকত আলী ২ মার্চ ১৯৫২ তারিখে গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীকালে জাতীয় ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির সঙ্গে শওকত আলীকে সম্পৃক্ত থাকতে দেয়া যায়। তিনি ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন। ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতাকর্মীদের অনেক বৈঠক, গোপন আলোচনা ইত্যাদি শওকত আলীর বাসভবনের অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শওকত আলী ১৯৭৫ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ভাষা-আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১১ সালে সরকার তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করেন এবং ঢাকায় তার নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। [সংগৃহীত]