Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:27 pm

আজকের দিনে

 

সুস্থধারার চলচ্চিত্রে অবদান অবিস্মরণীয় শেখ নিয়ামত আলী, তিনি একাধারে চলচ্চিত্র নির্মাতা, চলচ্চিত্র সংসদ কর্মী, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ছিলেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিনবার শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।  শেখ নিয়ামত আলী ১৯৪০ সালের ৩০ এপ্রিল ভারতের চব্বিশ পরগনায় জš§গ্রহণ করেন। তবে তার পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটে। ১৯৫৬ সালে তিনি কলকাতার দক্ষিণ গড়িয়া যদুনাথ বিদ্যা মন্দির থেকে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা পাস করেন। ১৯৬১ সালে নন কলেজিয়েট এক্সটার্নাল স্টুডেন্ট হিসেবে কলা বিভাগ থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন এবং ১৯৬৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন। ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়েই চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসে কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন এবং তখন থেকেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। ঢাকায় এসে যুক্ত হন বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন চলচ্চিত্র সংসদ ‘পাকিস্তান চলচ্চিত্র সংসদের’ সঙ্গে। স্বাধীন বাংলাদেশে পত্রপত্রিকায় চলচ্চিত্রবিষয়ক প্রচুর লেখালেখি করেন তিনি। ১৯৭৯ সালে যৌথভাবে ‘সূর্যদীঘল বাড়ী’ নির্মাণের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সূর্য দীঘল বাড়ী (ঞযব ঙসরহড়ঁং ঐড়ঁংব) ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন মসিহউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলী। বিশিষ্ট গ্রন্থকার আবু ইসহাকের ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত (উপন্যাস) সূর্য দীঘল বাড়ি অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করা হয়।  কথাসাহিত্যিক আবু ইসহাককে পাঠকদের কাছে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। তিনি অল্প লিখলেও, সেসব লেখা সুপরিচিত এবং পাঠকপ্রিয়। তিনি সর্বাধিক খ্যাতি পেয়েছেন তার সূর্য দীঘল বাড়ি উপন্যাসের জন্য। সূর্য দীঘল বাড়িই বাংলাদেশের প্রথম সরকারি অনুদান প্রাপ্ত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। শখ নিয়ামত আলী পরিচালিত দ্বিতীয় ছবি ‘দহন’। ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। সুস্থধারার চলচ্চিত্র হিসেবে ছবিটি ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়। দহন এটিও একটি রাষ্ট্রীয় অনুদানে নির্মিত চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য দেশি-বিদেশি প্রায় ৬০টি পুরস্কার অর্জন করার সৌভাগ্য লাভ করেন শেখ নিয়ামত আলী। এছাড়া তিনি নাটকও পরিচালনা করেছেন। ১৯৯৬ সালে বিটিভির জন্য নির্মাণ করেছিলেন দিলারা ডলি রচিত ‘শেষ দেখা শেষ নয়’ নাটকটি। বাংলাদেশের কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার শেখ নিয়ামত আলী ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। [সংগৃহীত]