Print Date & Time : 26 June 2025 Thursday 5:34 pm

আজকের দিনে

লোকপ্রিয়ভাবে ‘শেরেবাংলা’ বা হক সাহেব রূপে পরিচিত আবুল কাশেম ফজলুল হক বরিশাল জেলার বর্ধিষ্ণু গ্রাম সাটুরিয়ায় ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর  মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস সদর উপজেলার চাখার গ্রামে। তিনি ছিলেন মুহম্মদ ওয়াজিদ ও সায়িদুন্নিসা খাতুনের একমাত্র পুত্র। বাড়িতে আরবি ও ফারসিতে সনাতন ইসলামি শিক্ষা গ্রহণ শেষে ১৮৯০ সালে ফজলুল হক বরিশাল জিলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, ১৮৯২ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ এবং ১৮৯৪ সালে বিএ পরীক্ষায় (রসায়ন, গণিত ও পদার্থবিদ্যা তিনটি বিষয়ে অনার্সসহ) উত্তীর্ণ হন। ১৮৯৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি গণিত শাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯০৬ সালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে হক সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় সর্ব ভারতীয় মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠায়ও তিনি সক্রিয় অংশ নেন। পরে সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি জনসেবামূলক কাজ ও আইন ব্যবসাকে বেছে নেন। ১৯২০ সালে কংগ্রেস-গৃহীত অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচির সঙ্গে সম্পর্কিত ব্রিটিশ পণ্য ও উপাধি বর্জনের তিনি সমর্থন করেন। ১৯২০ সালে হক,  কাজী নজরুল ইসলাম ও মুজাফ্ফর আহমদ মিলে নবযুগ নামে একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯২৪ সালে প্রায় ছয় মাসের জন্য হক শিক্ষামন্ত্রী হয়েছিলেন। প্রথম মন্ত্রিসভার আমলে (১৯৩৭-১৯৪১) হক কৃষকদের দুঃখকষ্ট মোচনে কিছু প্রশংসনীয় কাজ করেছিলেন। তিনি wZwb Bengal Agricultural Debtors Act (১৯৩৮) কার্যকর করে উচ্চহারে সুদ নেয় এমন মহাজনদের কবল থেকে দরিদ্র কৃষকদের রক্ষা করেন। তিনি বাংলার সব এলাকায়  ঋণ সালিসি বোর্ডও স্থাপন করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ-বিভক্তি পর তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করতে শুরু করেন এবং ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫২ সালে পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন। ১৯৪৮ সালে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী ছাত্রদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করলে ফজলুল হক আহত হন। ১৯৫৩ সালের ২৭ জুলাই ফজলুল হক ‘শ্রমিক-কৃষক দল’ গঠন করেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে হক, মওলানা  আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সোহরাওয়ার্দী  যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। হক এ জোটের নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের পর এ কে ফজলুল হক পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হন। ১৯৫৬ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হন এবং ১৯৫৮ সালে সে পদ থেকে অপসারিত হন। তারপর থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেন।  ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

সংগৃহীত