ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিবিদ ও স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। তিনি আধুনিক ভারতীয় জাতি-রাষ্ট্রের অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত। উপমহাদেশের রাজনীতিতে তিনি একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর জš§ ১৮৮৯ সালের ১৪ নভেম্বর এলাহাবাদে। তার প্রথম শিক্ষার পাঠ বাড়িতেই গৃহশিক্ষকদের কাছে। ১৫ বছর বয়সে তার ইংল্যান্ড যাত্রা। হ্যারোতে দুই বছর থাকার পর তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন প্রকৃতি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার জন্য। এরপর তিনি ব্যারিস্টারির কাজ শুরু করেন। ১৯১২ সালে দেশে ফিরেই তিনি সরাসরি রাজনীতির সংস্পর্শে চলে আসেন। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীকালে তার মেয়ে ইন্দিরা গান্ধী ও দৌহিত্র রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১২ সালে একজন প্রতিনিধি হিসেবে তিনি বাঁকিপুর কংগ্রেসে উপস্থিত ছিলেন। ১৯১৯ সালে এলাহাবাদের হোম রুল লিগে তিনি সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় ১৯১৬ সালে। গান্ধীজির আদর্শ তাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে। ১৯২০ সালে উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড় জেলায় কিষাণ মার্চ সংগঠিত করেন তিনিই। ১৯২০-২২-এর অসহযোগ আন্দোলনের দিনগুলোয় তিনি দুবার কারাবরণ করেন। পণ্ডিত নেহরু নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন ১৯২৩-এর সেপ্টেম্বরে। পরে ১৯২৬ সালে তিনি ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, জার্মানি ও রাশিয়া সফরে যান। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে কংগ্রেস অব অপ্রেজড ন্যাশনালিটিজে তিনি উপস্থিত ছিলেন। ১৯২৭ সালে মস্কোয় অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের দশম বার্ষিকীতেও তিনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এর আগে ১৯২৬ সালে মাদ্রাজ কংগ্রেসে স্বাধীনতাই যে কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য তা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। ১৯২৮ সালে ২৯ আগস্ট সর্বদলীয় কংগ্রেসে তিনি অংশ নেন এবং ভারতীয় সংবিধানের সংস্কার সম্পর্কিত নেহরু রিপোর্টে স্বাক্ষর করেন। এ রিপোর্টটির নামকরণ করা হয় তার পিতা মতিলাল নেহরুর নামানুসারে। ওই বছরই তিনি ‘ইন্ডিপেন্ডেস ফর ইন্ডিয়া লিগ’ প্রতিষ্ঠা করেন। পণ্ডিত নেহরু ১৯৬৪ সালের ২৭ মে নিজ কার্যালয়ে মৃত্যুবরণ করেন। [সংগৃহীত]
