শিক্ষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিবস আজ। ১৮৯০ সালের ২৬ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার শিবপুরে তার জন্ম। তিনি মতিলাল শীল ফ্রি স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৯০৭), স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে এফএ (১৯০৯), প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ (১৯১১) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ (১৯১৩) ডিগ্রি লাভ করেন। পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য তিনি বিভিন্ন বৃত্তি ও পুরস্কার লাভ করেন; সেসবের মধ্যে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি ও জুবিলি গবেষণা পুরস্কার (১৯১৯) উল্লেখযোগ্য। সুনীতিকুমার এমএ পাস করার পর ওই বছরই বিদ্যাসাগর কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯১৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন। ১৯১৯ সালে তিনি ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে লন্ডন যান এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফোনেটিক্সে ডিপ্লোমা ও ডিলিট (১৯২১) ডিগ্রি লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘ঙৎরমরহ ধহফ উবাবষড়ঢ়সবহঃ ড়ভ ইবহমধষর খধহমঁধমব’। ১৯২২ সালে দেশে ফিরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ভাষাতত্ত্বের খয়রা অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ৩০ বছর কর্মরত থাকার পর তিনি ইমেরিটাস প্রফেসর পদে পুনর্নিয়োগ লাভ করেন এবং ১৯৬৩ সালে ভারতের জাতীয় অধ্যাপক হন। সুনীতিকুমার রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মালয়, সুমাত্রা, জাভা, বালি ও শ্যামদেশ ভ্রমণ করেন এবং এসব স্থানে ভারতীয় শিল্পসংস্কৃতি সম্পর্কে বক্তৃতা করেন। এছাড়া তিনি এশিয়া, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ভাষাতাত্ত্বিক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে বক্তৃতা দেন। সুনীতিকুমার ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ৩৮০টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেন। তার বিখ্যাত রচনা হলো অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অব দি বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ, দি (ওডিবিএল, ১৯২৬)। এটি প্রকাশিত হওয়ার পরপরই তার খ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং রবীন্দ্রনাথ তাকে ‘ভাষাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো: ইবহমধষর চযড়হবঃরপ জবধফবৎ (১৯২৮), বাংলা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা (১৯২৯), পশ্চিমের যাত্রী (১৯৩৮), ভারতের ভাষা ও ভাষা সমস্যা (১৯৪৪), সরল ভাষা প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ (১৯৪৫), ভারত সংস্কৃতি (১৯৫৭), সংস্কৃতি কী (১৯৬১), খধহমঁধমবং ধহফ খরঃবৎধঃঁৎবং ড়ভ গড়ফবৎহ ওহফরধ (১৯৬৩), ডড়ৎষফ খরঃবৎধঃঁৎব ধহফ ঞধমড়ৎব (১৯৭১), রবীন্দ্রসঙ্গমে, ইউরোপ ভ্রমণ, দ্বীপময় ভারত ও শ্যামদেশ ইত্যাদি। ভাষাতত্ত্ব এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য তাকে এলাহাবাদ হিন্দু সাহিত্য সম্মেলন ‘সাহিত্য বাচস্পতি’ (১৯৪৮) এবং ভারত সরকার ‘পদ্মবিভূষণ’ (১৯৬৩) উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৭ সালের ২৯ মে কলকাতায় তার মৃত্যু হয়। [সংগৃহীত]
আজকের দিনে

আরো খবর ➔
সর্বশেষ
আর্কাইভ

রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
২৯ | ৩০ |