Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 2:31 am

আজকের দিনে

রফিক উদ্দিন আহমদ (১৯২৬-১৯৫২) ভাষাশহীদ। ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার পারিল গ্রামে তার জš§। তার পিতার নাম আবদুল লতিফ ও মাতার নাম রাফিজা খাতুন। এই দম্পতির পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে রফিক ছিলেন বড় সন্তান।  রফিক বাল্যকালে কিছুটা ডানপিটে ছিলেন। তাই গাছ থেকে পড়ে তার হাত ভেঙে চিকিৎসার জন্য কলকাতা যান। কলকাতা অবস্থানকালে মিত্র ইনস্টিটিউশনে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর রফিক উদ্দিনের পিতা ঢাকায় চলে আসেন। এখানে বাবুবাজারে আকমল খাঁ রোডে পারিল প্রিন্টিং প্রেস নামে ছাপাখানা চালু করেন। রফিক বায়রা স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪৯ সালে এ স্কুল থেকে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শহিদ রফিক সাহিত্যাঙ্গনে ছড়া রচনায় পটু ছিলেন এবং সেলাই ও সূচি শিল্পেও বেশ দক্ষ ছিলেন। মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র কলেজে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসে অধ্যয়নকালে তিনি পড়াশোনা বন্ধ করে ঢাকায় চলে আসেন এবং পিতার মুদ্রণশিল্প ব্যবসায়ে নিয়োজিত হন। ঢাকায় তিনি পুনরায় জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়) হিসাববিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সারা ঢাকায় ধর্মঘট আহ্বান ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। সরকার ওইদিন ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করে। রফিক উদ্দিনও মিছিলে অংশ নেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হোস্টেল প্রাঙ্গণে মিছিলের ওপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে এবং ঘটনাস্থলেই রফিক উদ্দিন শহিদ হন। পুলিশ তার লাশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায় এবং রাত ৩টায় সামরিক বাহিনীর প্রহরায় ঢাকার আজিমপুর গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়। ভাষা আন্দোলনে আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদকে ২০০০ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। এছাড়া তার গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রফিকনগর করা হয় এবং ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রামে তার নামে ‘ভাষাশহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নামে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভবনের নাম ‘ভাষাশহীদ রফিক ভবন’ নামকরণ করা হয়।

সংগৃহীত