আজকের দিনে

রাজনীতিক মোহাম্মদ ফরহাদ পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ১৯৩৮ সালের ৫ জুলাই জš§গ্রহণ করেন। তার পিতা আহমেদ সাদাকাতুল বারী ছিলেন শিক্ষাবিদ এবং মা তৈয়বন্নেসা। দিনাজপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। তেভাগার সংগ্রাম ও বাম আন্দোলনের ঐতিহ্যমণ্ডিত দিনাজপুরে গোপন পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন মোহাম্মদ ফরহাদ। কারামুক্তির পর ১৯৫৫ সালে তিনি আত্মগোপনকৃত পার্টির আনুষ্ঠানিক সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৬২ সালে আইয়ুববিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের অন্যতম রূপকার ছিলেন মোহাম্মদ ফরহাদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ ডিগ্রি লাভের পর মোহাম্মদ ফরহাদ কিছুকাল দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় কাজ করেন। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সাংবাদিকতা পেশায় তিনি স্থিত হতে পারেননি। তিনি ১৯৬৬ সালে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক নির্বাচিত হন। বিশ্বব্যাপী সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে চীন-সোভিয়েত বিরোধের ফলে যে বিভেদ দেখা দেয় তার প্রভাবে এ দেশের বাম আন্দোলনও পরস্পরবিরোধী শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং ১৯৬৫ সালে ছাত্র গণসংগঠনেও বিভক্তি দেখা দেয়। মোহাম্মদ ফরহাদ মস্কোপন্থি হিসেবে পরিচিত গোষ্ঠীর তরুণ নেতা হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে কমিউনিস্টদের সম্পৃক্ত হওয়ার পটভ‚মি তৈরিতেও তিনি বিশেষ ভ‚মিকা রাখেন। স্বাধীন বাংলাদেশে কমিউনিস্ট পার্টি প্রকাশ্যে কাজ করার সুযোগ লাভ করে এবং ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে মোহাম্মদ ফরহাদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যা-পরবর্তী সময়ে ফরহাদ একাধিকবার কারাবরণ করেন। ১৯৮৭ সালে জেনারেল এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ১৫ দল ও ৭ দলের যুগপৎ কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মোহাম্মদ ফরহাদের ছিল বিশেষ ভ‚মিকা। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে ১৫ দলীয় প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পার্টি সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারায় অবদান রচনার পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ১৯৮৭ সালের ৭ অক্টোবর মস্কোয় চিকিৎসাধীন থাকাকালে মোহাম্মদ ফরহাদের অকাল মৃত্যু এ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। মোহাম্মদ ফরহাদ স্বনামের চাইতে বেনামিতেই বেশিরভাগ রাজনৈতিক নিবন্ধ লিখেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ উনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থান। [সংগৃহীত]