আজকের দিনে

প্রতি বছর ২ নভেম্বর জাতীয় স্বেছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত হয়। দেশে ১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ডিএমসিএইচ ব্লাড ব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মতো স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে এবং পরবর্তী সময় এই দিনটিকেই ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয়া হয়।

হিমোগ্লোবিনের অভাব অথবা থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে অনেক মানুষ রক্তশূন্যতায় ভোগে। তখন তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হয় অন্যের রক্ত। এই রক্ত যেহেতু ক্রয় করা যায় না, সেহেতু আপনার আমার রক্তদানের ওপরই নির্ভর করে তাদের বেঁচে থাকতে হয়। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে বা ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসায় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখনও বাংলাদেশে রক্তের অভাবে অনেক রোগী মারা যায়। তবে আশার কথা এখন তরুণরাও সচেতন অনেকেই রক্তদান করতে এগিয়ে আসছে।

রক্তদানের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী যেকোনো সুস্থ মানুষ যাদের ওজন ৪৫ কেজির বেশি তারা প্রতি চার মাস পর পর রক্তদান করতে পারেন। রক্তদান না করলেও চার মাস পর পর মানবদেহে নতুন রক্ত তৈরি হয় এবং আগের রক্তকনিকাগুলো এমনিতেই মারা যায়। রক্তদান করলে শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কনিকা তৈরির জন্য শক্তি পায়। রক্তদানে শরীরে লোহিত কনিকাগুলোর কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। নিয়মিত রক্তদানে রক্তের কোলেস্টেরলের উপস্থিতি কমাতেও সাহায্য করে। স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে মানুষ বিনা মূল্যে জানতে পারে নিজের শরীরে হেপাটাইটিসি-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া এবং এইচআইভি (এইডস) এর মতো জটিল কোনো রোগ রয়েছে কিনা। সবচেয়ে বড় কথা হলো, রক্তদানের মাধ্যমে একজন মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচানোর মতো কাজে শরিক হতে পেরে নিজের মানসিক তৃপ্তি মেলে। বর্তমানে প্রচার প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে আমাদের রক্তদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। নিমতলীর দুর্ঘটনা অথবা সাভার ট্রাজেডির সময়ও আমরা দেখেছি মানুষ লাইন ধরে রক্তদান করছে। এতে রক্ষা পেয়েছে অসংখ্য মানুষের প্রাণ।

রক্তদানের মতো মরণোত্তর চক্ষদানে আমরা তেমন কোনো অগ্রগতি লাভ না করতে পারলেও চেষ্টার কমতি নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয় মরণোত্তর প্রক্রিয়ায়। চক্ষুদানে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলংকা এখনও এগিয়ে। সে দেশের বেশির ভাগ মানুষ মরণোত্তর চক্ষুদান করে। ফলে কর্নিয়া সরবরাহে অন্যান্য দেশকেও তারা সহায়তা করতে পারছে।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ

উপাচার্য, বিএসএমএমইউ

[সংগৃহীত]

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০