Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 10:29 am

আজকের দিনে

আজ বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস। বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর ৫ নভেম্বর বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। বিশ্ববাসীর মধ্যে বিশেষত উপক‚লবর্তী অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে সুনামি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যেই বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। সুনামি জাপানি শব্দ, এরর অর্থ সামুদ্রিক তরঙ্গ। একের পর এক বৃহদায়তন তরঙ্গের ফলে যে প্রবল সামুদ্রিক জলোচ্ছ¡াস সংঘটিত হয় তাকেই সুনামি নামে অভিহিত করা হয়।

যাবতীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলোর মধ্যে সুনামি বিরল ঘটনা হলেও এই দুর্যোগে প্রাণহানি এবং সম্পত্তিনাশ অন্যগুলোর তুলনায় অনেকটাই বেশি পরিমাণে ঘটে থাকে। মূলত সমুদ্রগর্ভে ভূমিকম্প কিংবা ভ‚মি স্খলনের কারণে সুনামির সৃষ্টি হয়ে থাকে এবং ধীরে ধীরে তা বিধ্বংসী জলোচ্ছাসের আকার নিয়ে জনবসতি তছনছ করে দেয়।

২০০৪ সালে সংঘটিত ভারত মহাসাগরের সুনামিটি এযাবৎকালের সংঘটিত সব সুনামির মধ্যে ভয়ংকর। ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ মোট ১৪টি দেশের কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়ে?ছিল এই ধ্বংসলীলায়। সমুদ্র উপক‚লবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা সে কারণে সর্বদাই আশঙ্কায় দিনযাপন করেন। সুনামির কবল থেকে কীভাবে প্রাণ ও সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব সে সম্পর্কে মানুষকে জানানো হয় এবং সুনামিসংক্রান্ত ঝুঁকি যতটা হ্রাস করা সম্ভব সেই প্রয়াস করা হয়ে থাকে।

২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে ৫ নভেম্বরকে বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিল। পরের বছর ২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর প্রথম এই দিনটি উদযাপন করা হয়েছিল। এই দিবসের পরিকল্পনা অবশ্য মূলত একটি ভূমিকম্প প্রবণ দেশ জাপানের মস্তিষ্কপ্রসূত।

৫ নভেম্বরকে বেছে নেয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের একটি অতি পুরোনো গল্পের প্রতি সম্মানপ্রদর্শনের মনোভাব। গল্পটি ‘ইনামুরা-নো-হাই’ নামে পরিচিত যার অর্থ হলো ধানের শীষ পোড়ানো। ১৮৫৪ সালের এক ভ‚মিকম্পের সময় জাপানের এক কৃষক দেখতে পান সমুদ্রের তরঙ্গ ফুলে ফুলে উঠছেÑযা কিনা সুনামির পূর্বলক্ষণ। তখন তিনি তার জমির ধানে অগ্নিসংযোগ করে সেই আগুনের সাহায্যে গ্রামবাসীদের সংকেত পাঠান; যাতে বিপদ আঁচ করে তারা উঁচু কোনো জায়গায় পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করতে পারে। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীরা স্বীকার করেন যে তারা প্রাণে বেঁচেছেন ওই আগুনের সংকেতের জন্য। তাছাড়া সেই কৃষক একটি বাঁধ এবং কিছু বৃক্ষরোপণ করেন ভবিষ্যতে এই ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সব দেশকে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং নাগরিক সমাজকে এই দিবস উদযাপনে অংশ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নিতে আহŸান জানায়।

রাষ্ট্রপুঞ্জের এই দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস অফিসের (টঘওঝউজ) যে ‘সেন্ডাই সেভেন অভিযান’ বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবসকে তার কার্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়েছে। [সংগৃহীত]