চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কবিরের জন্ম ১৯৩৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাঙামাটি শহরে। তার পিতার নাম আবু সাইয়েদ আহমেদ ও মায়ের নাম আমিরুন্নেসা বেগম। পৈতৃক নিবাস বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায়। তার লেখাপড়া শুরু হয় হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা বিজ্ঞানে বিএসসি অনার্স পাস করেন। অতঃপর তিনি লন্ডনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। এক সময় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ইঙ্গমার বার্গম্যান নির্মিত সেভেন্থ সিল দেখে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বামপন্থি রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি ব্রিটিশ কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। এরপর তিনি প্যালেস্টাইন ও আলজিরিয়ার মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেন। এক সময় ফরাসি সরকারের হাতে ধরা পড়ে তিনি আট মাস জেল খাটেন। ১৯৬৬ সালে তিনি দেশে ফিরে বাংলাদেশে বামপন্থি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। একপর্যায়ে আইয়ুব সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে রাখে। জেল থেকে বের হওয়ার পর এক বছর তিনি নজরবন্দি থাকেন। ১৯৬৭ সালে আলমগীর কবির দৈনিক অবজারভার পত্রিকায় যোগ দেন, পরে সিনিয়র এডিটর হিসেবে সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা সিনেক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন এবং ইংরেজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ‘আহমেদ চৌধুরী’ ছদ্মনামে তিনি ইংরেজি খবর ও কথিকা পাঠ করেন। তিনি লিবারেশন ফাইটার্স নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার ওপর নির্মিত স্টপ জেনোসাইডয়ের চিত্রনাট্যকার ও ধারাভাষ্যকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে তিনি বেশ কটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তার নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো ধীরে বহে মেঘনা, সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে, রূপালী সৈকতে, মোহনা, পরিণীতা ও মহানায়ক (১৯৮৫)। তিনি বেশ কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়া ফিল্ম ইন ইস্ট পাকিস্তান, ফিল্ম ইন বাংলাদেশ, সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে, মোহনা ও সিনেমা ইন বাংলাদেশ তার প্রকাশিত গ্রন্থ। তিনি ১৯৭১ সালে চলচ্চিত্রের আদলে দুটি নাটক ধীরে বহে মেঘনা ও দিস ওয়াজ রেডিও বাংলাদেশ নির্মাণ করেন। আলমগীর কবির বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, উত্তরণ-এর জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সৈয়দ মোহাম্মদ পারভেজ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি তার মৃত্যু হয়।
আজকের দিনে

আরো খবর ➔
সর্বশেষ
আর্কাইভ

রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
২৯ | ৩০ |