Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 10:01 pm

আজকের দিনে

উইং কমান্ডার এম হামিদুল্লাহ খান (১৯৪০-২০১১) বিমানবাহিনী অফিসার, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ও রাজনীতিক। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদিনীমণ্ডল গ্রামে ১৯৪০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম। বাবা মুহাম্মদ দবিরউদ্দিন খান ছিলেন একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং তার মা জসিমুন্নেসা। হামিদুল্লাহ খানের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয় তার বাবার বিভিন্ন কর্মস্থলে। তিনি ১৯৫৯ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি লাভ করেন। হামিদুল্লাহ খান ১৯৬০ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। দুই বছর প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৬২ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৭০ সালের শেষের দিকে তিনি পূর্বপাকিস্তান বিমানবাহিনীর সদর দপ্তরে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রভোস্ট মার্শাল পদে কর্মরত ছিলেন।

হামিদুল্লাহ খান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই যুদ্ধে যোগ দেন। প্রথম দিকে তিনি বিহারের চাকুলিয়ায় সর্ববৃহৎ গেরিলা ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সামরিক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের ১০-১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডার্স কনফারেন্সে মুখ্য প্রতিনিধিদের একজন ছিলেন হামিদুল্লাহ খান। পরে তিনি ১১ নং সেক্টরে মাইনকারচর সাব-সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন। যুদ্ধে তার নেতৃত্ব ও বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার তাকে ফিল্ড প্রমোশন দিয়ে স্কোয়াড্রন লিডার পদে উন্নীত করে। ১৯৭১ সালের ৯ নভেম্বর হামিদুল্লাহ খান ১১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। স্বাধীনতার পর হামিদুল্লাহ খান বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে স্কোয়াড্রন লিডার পদে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালের প্রথম দিকে তিনি উইং কমান্ডার হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার হামিদুল্লাহ খানকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। তার নামে ঢাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক শহর বনানীর ২৩নং সড়কের নতুন নামকরণ হয় হামিদুল্লাহ খান সড়ক। হামিদুল্লাহ খান ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগ দেন। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-২ আসন থেকে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালে আবার তিনি একই নির্বাচনী এলাকা থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হয়ে তিনি বিএনপি ত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তবে এক বছরের মধ্যেই তিনি বিএনপির রাজনীতিতে ফিরে যান। হামিদুল্লাহ খান ২০০৮ সালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঢাকার মিরপুর নির্বাচনী এলাকায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় তার মৃত্যু হয়। [সংগৃহীত]