আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় হাবীবুল্লাহ সিরাজী

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। আজ মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় দফা নামাজে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।

এর আগে, সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ নেয়া হয় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কবির প্রথম নামাজে জানাজায় অংশ নেন শ্রেণী পেশার মানুষ। সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৭২ বছর। তিনি ক্যান্সারসহ নানা জটিলরোগে ভুগছিলেন। কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। ২০১৮ সালে ২০শে ডিসেম্বর বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আধুনিক বাংলা কবিতায় হাবীবুল্লাহ সিরাজী এক অনন্য নাম। সমাজ, দেশ ও বিশ্বপরিস্থিতির সুগভীর বৈচিত্র্য কবিতার পঙ্কতিমলায় ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। পাঠকের ভালোবাসায় প্রকৌশলী থেকে কবি হয়ে ওঠা হাবীবুল্লাহ সিরাজী লিখেছে উপন্যাস, অনুবাদ আর শিশু সাহিত্যও। পেয়েছেন একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। সবশেষ ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী, ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুরের রসুলপুর গ্রামে জন্ম গুণী এই মানুষের। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী। তবে, ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক ছিলো লেখালেখিতে। তাই প্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনা শেষেও থিতু হন সাহিত্যের গন্ডিতেই।

মূলত কবিতাতেই বেশি আগ্রহ ছিলো তাঁর। লিখেছেন ৩২টি কাব্যগ্রন্থ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দাও বৃক্ষ দাও দিন’, নোনা জলে বুনো সংসার, নির্বাচিত কবিতা। সেসব লেখনিতে বিষয়ভাবনার সুগভীর বৈচিত্র্যের পাশাপাশি ছিলো ইতিহাস ও মানুষ, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং প্রগতির অভিযাত্রার ছাপ।

শুধু কবিতা নয়, তার আখ্যানমূলক ও আত্মজৈবনিক রচনাও অনন্যতার দাবিদার। রচনা করেছেন দু’টি উপন্যাস, দু’টি প্রবন্ধ, একটি স্মৃতিকথা এবং ১০টির মতো ছড়ার বই। এছাড়া অনুবাদ তার আর এক প্রিয় ভুবন।

২০১৬ সালে একুশে পদক পান হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এছাড়া বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রূপসী বাংলা পুরস্কার, বিষ্ণু দে পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কারসহ পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা।

১৯৭২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৮ সালে তাকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেয় সরকার। তবে, এমনসব গুরু দায়িত্বেই কেবল নয়, অসাধারণ লেখনী দিয়ে পাঠকের হৃদয়ে দীর্ঘকাল সমুজ্জ্বল থাকবেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০