নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ বুধবার থেকে দেশের কয়েকটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহের ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ঘন কুয়াশা থাকবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আগামীকাল (বুধবার) থেকে দেশের কয়েকটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। সেই সঙ্গে গত কয়েক দিনের তুলনায় সারাদেশে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। এছাড়া আগামী কয়েক দিন কুয়াশা থাকবে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টা বা ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম বলেন, বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে এবং পশ্চিমাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহী, রংপুর বিভাগ ও খুলনা বিভাগের কয়েকটি জেলা, সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গল এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, হাতিয়া ও রাঙামাটিÑএসব অঞ্চলের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ থেকে উত্তরের কয়েকটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যেতে পারে।
মঙ্গলবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। তবে গত কয়েক দিনের ঘন কুয়াশা কেটে গতকাল সকাল সকাল ঝলমলে রোদের দেখা মেলায় স্বস্তি ফিরেছে সবার মধ্যে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
হিমালয়ের কাছাকাছি উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে গত শনিবার রাত থেকে ঘন কুয়াশা ঝরতে শুরু করে। এরপর রোববার ও সোমবার দিনের বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় কুয়াশা। এতে সূর্যের তীব্রতা ছড়াতে না পারায় প্রায় সারাদিনই অনুভূত হয় শীত।
পঞ্চগড় শহরের পানের দোকানদার সোনাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে প্রচুর কুয়াশা ছিল। সকালে যখন বাড়ি থেকে বের হই, তখনও কুয়াশায় কিচ্ছু দেখা যাচ্ছিল না। তবে এখন কুয়াশা কমে সূর্যের দেখা পাওয়ায় মনে হচ্ছে দিনে কিছুটা গরম লাগবে।’
রিকশাচালক শাহজাহান আলী বলেন, ‘আইজকা ভোরে কুয়াশার লগত (সঙ্গে) ঠাণ্ডাখানও খুব কইচ্ছে। এলা রোদ উঠিবা ধরিচে, বাপু। দিনডা বোধে ভালোই যাবে। বেশি ঠাণ্ডা হইলে কাস্টমার (যাত্রী) বেশি পাওয়া যায় না।’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ মোবাইল ফোনে বলেন, মঙ্গলবার সকালে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় কুয়াশা কমে গেছে। কুয়াশা কমে যাওয়ায় উত্তরের হিমেল বাতাস সহজেই তেঁতুলিয়ায় ঢুকছে। এজন্য বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। দিনের বেলা রোদ থাকায় মানুষের মধ্যে স্বস্তিও থাকবে। এখন থেকে ধীরে ধীরে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমতে থাকবে। এই মাসের শেষ দিকে এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।